Monday, February 5, 2024

রাম মন্দির



কত সহস্র অপেক্ষার আজ ছুটি, 
কত সহস্র প্রাণ দিয়ে হল সারা 
যাগযজ্ঞের উপাচার, জানি লাগে
তোমার জন্য উজিয়ে এসেছে তারা। 

ধৈর্যের কত পরীক্ষা দিতে হয়, 
ধর্মের সাথে আছে কত সংহতি, 
কলিযুগে যেন ত্রেতা এল আজ ফিরে 
তোমার পায়েতে করতে চেয়ে প্রণতি। 

আবার পুরনো সভ্যতার আজ শুরু, 
আবার গলায় দিগবিজয়ীর মালা, 
আবার এসেছ ঘরে ফিরে রঘুনাথ, 
আবার অকালে দীপ জ্বালানোর পালা। 

Tuesday, January 3, 2023

সময়কাল

 মুরুব্বীরা বলবে অনেক কথা, 

অভিজ্ঞতার সাক্ষ্য রাখা চাই। 
শুনে নিও, কাজ কী প্রতিবাদে? 
সময় নষ্ট, বদলাবে কী ছাই! 

চলবে সবাই নিজের মর্জিমত, 
এইভাবেই তো সমস্ত যুগ চলে, 
কেউ বা ডাইনে, কেউ চলেছে বাঁয়ে, 
যৌবনের এক অবাধ্যতার দলে। 

তারাও জানে, তবুও কিছু বলা, 
অভ্যাসেরই দোষের জন্য তবে, 
এইভাবেই তো সমাজ চলার রীতি, 
কাউকে তো চালিয়ে যেতে হবে। 

তোমাদেরও একই গতিপথ 
যতোই এগোও বার্ধক্যের দিকে, 
সময় দেখাই অদ্ভুত এই খেলা, 
যার কাছে সব আদর্শ হয় ফিকে। 

ছন্দভাঙা


প্রতিদিন শুধু সাবধান হয়ে চলা, 
প্রতিদিন হাঁটা সেই চেনা রাস্তায়; 
অনুশাসনেতে শরীর হয়তো আছে, 
অনুসূচি মেনে জীবন চালানো যায়? 

প্রাতঃকৃত্য কোকিলের ডাক শুনে
একদিন যদি বলে ওঠে ধুর শালা, 
অনেক শুঁকেছি ভোরের গন্ধ, আজ 
আয়েশের সাথে দিবানিদ্রার পালা! 

সিনানের সাথে ভাব-ভালোবাসা থাক, 
মধ্যাহ্নের নিয়মের সাথে আড়ি। 
কলকব্জারা হরতাল ডেকে দেবে? 
সেসবে আমার বয়েই গিয়েছে ভারি। 

আমিও তাদের সঙ্গে থাকব তীরে, 
মিছিল বেরোবে, সাথে নিয়ে দাবি-দাওয়া। 
এখনো তাদের এজেন্ডা নেই কোন, 

নিয়ম ভাঙায় এটাই উপরি পাওয়া।  

Sunday, January 2, 2022

সহবাস

তোমার সাথে সময় কাটাই, দারুণ লাগে। 
হয়তো কোন কথাই হয় না প্রেম বা প্রীতির, 
তবুও কিছু আমেজ আছে, একাত্মতা,  
শব্দগুলো ভাসিয়ে বেড়ায় ঢের সোহাগে। 

খুচরো কিছু কাজের কথা, হাট বাজারি, 
চায়ের কাপের ধোঁয়া, সাথে স্বপ্ন বোনা, 
সমাজ নিয়ে চিন্তা, এবং ভবিষ্যতও 
গল্পে ঢোকার জন্য করে গাজোয়ারি। 

তোমার সাথে আকাশ দেখি আচম্বিতে, 
তোমার সাথে রান্নাঘরে শিল্পকলা, 
জানলা দিয়ে ভেসেই চলে কণ্ঠধ্বনি, 
মুখোশ খুলি বক্র চোখের অতর্কিতে। 

প্রেমটা নাকি আসলে এক গোলকধাঁধা,  
অদক্ষতার জন্য তাতে টুকলি লাগে, 
তাও জানি না কেমন করে তোমার জন্য,  
ছন্নছাড়া গল্পগুলোও ছন্দে বাঁধা। 







Thursday, December 30, 2021

অজ্ঞানতা

আমাদের বলা হয়নি ঈশ্বর আছে কিনা নেই। 

নিজেদের মত করে ভেবেছি সে আবছা অবয়ব। 

সন্দেহ চলে গেছে বলব না বুকে হাত রেখে, 

বলব না কল্পনাপ্রসূত, বা ঘোর বাস্তব। 


এই যে এই দোলাচল, এই যে সিদ্ধান্তহীনতা, 

এই যে এই ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকা অনির্বাপ শিখা, 

এভাবেই থাক তারা, জীবনে তো আরও কিছু চাই, 

প্রেমালাপ, পুরষ্কার, গরিমা, বা তীব্র অহমিকা। 


তার মাঝে অন্যকে ঠাঁই দেব, আছে কি সময়? 

দুর্দিন এসেছে যে তাঁর কাছে মেলে দেব সব? 

এখনো তো বড় রাস্তায় আছি, বাঁধানো মোরামে, 

একটু আয়েশ করি, তারপর অন্য অনুভব। 


আমরা বাঁচি ইদানীং আধুনিক একবিংশ শতকে, 

অতিক্রম করে ফেলে সাত মহাসমুদ্রের বাধা; 

তবু যেন মনে হয় হারিয়েছি বহু অনুভূতি, 

ভালোবাসা, ঈশ্বর, পৃথিবীর আর যত ধাঁধা। 



Tuesday, February 9, 2021

সে

তার ভাবনার রঙ গোলাপি, তার মনের ভাবটি তুরীয়, 
এক লহমার কোন ফুরসত পেলে সেই চত্বরে ঘুরিয়ো। 
তার খোঁপার মধ্যে সুগন্ধ আছে, চোখের মধ্যে তৃষ্ণা, 
তার ঠোঁটের মধ্যে আকাঙ্খা, তবু বলে সে আর করিস না। 

তার ভাবনার গত পাঁচপাতা তবু মুখে তার কোন কথা নেই, 
তবু সেই মুখ চেয়ে বসে থাকা চলে, কিছু গল্প সে শোনাবেই। 
কোন রঙপেন্সিলের আঁকিবুকি নেই, মাধুর্য তার হাসিতে, 
সেই দীপ্তির মাঝে কারণের খোঁজ লাগে না যে ভালবাসিতে। 

তার দুঃখের স্বাদ নোনতা এবং মনমরা হলে ফ্যাকাশে। 
সে তো মানসপ্রতিমা, হৃদয়ে চারণ, কখনো থাকে না একা সে। 
সে তো শিশুদের মাঝে শৈশবে যায়, কঠিনের মাঝে শক্ত, 
কোন কারণ লাগে কি তার প্রতি হতে সবিশেষ অনুরক্ত? 

তাকে বলতে লাগে না কোন কথা, তাকে শোনাতে হয় না অনুযোগ, 
তার দৃষ্টির মাঝে আছে কোন যাদু, কাটিয়ে দেয় সে দুর্ভোগ। 
তার প্রতি স্বরে আছে আর্দ্রতা, তার প্রতিচ্ছবিটি স্নিগ্ধ, 
তার প্রেমময় কোষে বাস করে আমি প্রতিক্ষণে হই ঋদ্ধ।  

Monday, January 18, 2021

নিরাবরণ

 

মানুষ হিসাবে অনেক খামতি আছে,
অথচ মানুষ হিসাবে আমার প্রচ্ছন্ন গর্বের শেষ নেই।
হয়তো সমাজ, হয়তো পরিবার, হয়তো আমি নিজেই,
নিজেই সৃষ্টি করেছি এই দম্ভের প্রাচীর।
ভালোমানুষি করেছি বিভিন্ন দাগে, সূক্ষ্ম এবং মোটা,
মোটাটাই কাজ দেয় বেশি।
কিন্তু প্রকৃতরূপ প্রকাশ পায় ক্ষণকালেই।
লুকাতে পারিনি শেষ পর্যন্ত নিজের থেকেও।
তুমি কাছে এসেছিলে অকাতরেই, আমিও আগল দিইনি।
কিছু চাহিদা আত্মনিয়ন্ত্রণকে ভেঙ্গে ফেলে শত বাধা সত্ত্বেও।
কিন্তু বিনিময়ে জুটল কেবল আত্মগ্লানি, দুঃখ,
আবার ভেঙ্গে ফেললাম তোমায়, অজান্তেই।
আমি মানুষ হিসাবে ব্যর্থ সে আমার অজানা নয়,
কিন্তু এই নীচতার আয়না তুমিই মেলে ধরলে প্রথম এত নগ্নরূপে।

তুমি স্বাভাবিক ছিলে জীবনে, আকাঙ্ক্ষায়,
আমাকেও ভেবেছিলে সেই রকমই।
তাতে দোষ দিতে পারি না তোমাকে।
সমস্যা যা ছিল আমারই, তোমাকে জানতে দিইনি এতদিন।
নিজেও যে জানতে পেরেছি এমন নয়।
সেই আমার প্রতিনিয়ত লব্ধ জীবনের ভুসর অবক্ষয়।
তোমাকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে চাই না আর,
আপাতত নিয়েছি তাই প্রায়শ্চিত্তের মহাভার।
কিন্তু আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো না ক্ষণকালেই।
আমার জীবনের এই সন্ধিক্ষণে এসে,
এটুকু উপলব্ধি যা দিয়েছ তাই আমার পাথেয়।
নতুনভাবে পথচলার উদ্যম, সে সঞ্চয় হবে কিনা জানিনা,
কিন্তু এটুকুই বা কতজন দেয়, নিঃশেষ করে নিজেকে।