Friday, September 27, 2019

জল

স্বর্গপুরে সমতল, সেথা হতে ফের কাছাকাছি, 
ভুলে যাইনি তোমাদের, এটুকু নিশ্চিত মনে রেখো 
হয়তো বাকি দিনগুলো স্পষ্ট করে হয়নি সেই কথা 
তবে এ বোঝার কথা, তোমাদের জন্য আজো বাঁচি। 

জীবনে তো কত কিছু করা হয়নি মনঃপুত করে,
ক্ষমা চাই না, হয়তো হবে আরো কত অসংখ্য বিচ্যুতি;
পলকের সাথে কত জীবন বদলিয়ে যায় আজ,
কত পূর্ণ সংসারে সন্ধ্যা নামে সহসা দ্বিপ্রহরে। 

আমার জীবনটাও এ যুগের কালচক্রে বাঁধা, 
জানো তুমি, চেষ্টা করি প্রতিপদে প্রতিস্পর্ধার
অসম লড়াই, যার আবেগ যতই হোক বেশি 
অন্তঃসারশূন্য সে তো, নেই কোন নিশ্চিত সমাধা। 

আজ আমি জল দেব, দিয়ে যাব যতদিন হয়। 
যতজন তৃষ্ণার্ত হয়ে চেয়েছে আমার অভিমুখে,
যেখানেই থাকি, ঠিক, তোমরা তো আমার উপরে, 
সোজা সিঁড়ি, যার মুখে অতন্দ্র প্রহরী সময়। 

Thursday, September 19, 2019

মাৎস্যন্যায়

আগুন জ্বলে চারিদিকে, আমার তখন শরীর জুড়ে ক্লান্তি 
হয়তো আমি নিরোর মতই নিষ্ঠুর, না আদপে বিভ্রান্তি 
আমার ভিতর, সন্ধ্যা থেকে বেজেই চলে রাগ-রাগিনীর শব্দ
যখন আমার বাংলা জুড়ে অন্ধকার, আর সুচিন্তা নিস্তব্ধ। 

অসময়ে অকিঞ্চিৎ এক প্রজ্ঞা কি আজ করল আমায় গ্রাস, 
দুঃসময়েও দিব্য চলে আগের মতই সুশান্ত নিশ্বাস 
অনীহা, না প্রতারিত হবার কোন আশঙ্কার প্রকোপে 
চিন্তা করি, বিবশতা অকস্মাত সে পুড়ল আমায় খোপে। 

হয়তো আবার রক্ত নিয়ে চলবে কিছুদিনের হোলিখেলা; 
শ্মশান সাজবে নিত্যদিনই, মাধুর্যহীন হবে সকালবেলা; 
নিরর্থক সে ধ্বংসলীলায় উৎপাদিত শুধুই অবসাদ, 
এই ঊষাতেই শহর জাগায় আগামী এক বিভৎস সংবাদ। 


Wednesday, September 18, 2019

হুতাত্মা

কেটে গেল অনেক দিনই, কড় গুণে আর বলার উপায় নাই,
ভুলে গেছি কাজের ফাঁকে, জীবনযুদ্ধে হবার কথা তাই।
তাছাড়া সে বহুদূরে, ম্যাপের সামনে হাতড়ে মরার হাল,
কী আর হবে, সেসব লড়াই আমাদের কাছে তো জঞ্জাল।

আমরা শুধু মির্জা গালিব, আমির খুসরো, ইকবালকে জানি,
শায়রিতে আজ নজম মিলে জাগায় বুকে রেখতার হাতছানি,
ঠিক যেখানে রাজেশ তাপস ধারণ করে অন্য কোন লক্ষ্য,
তাই তো তারা বাঙলা ভাষার শত্রুসেনার আসল প্রতিপক্ষ।

ফার্সি যাদের দরবারে, আর আরবী যাদের হৃদয়জুড়ে থাকে,
ছোট্ট পায়ে উর্দু যারা ঢোকাতে চায় আমার বুলির ফাঁকে,
তাদের পথে আটকেছিল প্রতিরোধে রঞ্জিত দুই প্রাণ,
শক্তি তারাই জোগায় আজো, দাড়িভিটের সুযোগ্য সন্তান।

Saturday, September 14, 2019

যা! উড়তে দিলাম তোকে

অপ্রেমেতে আমার তাগিদ যেমন ছিল কিটস-শেলির প্রেমে,
ভাবনার অমিল বলব না থাক, তোমার চোখে চাই না যেতে নেমে।  
কিন্তু তুমি বুঝবে যদি আমার ভাবনা স্পর্শ করতে পারো, 
যে এলাকায় অদ্যবধি নির্মিত নয় উপনিবেশ কারো।

আগে তবু অল্প হলেও ফুটত কিছু বহিরাগত ভাষা 
ভাবনাগুলো বিহ্বলতায় ফুলত, যেমন আশায় বাঁচে চাষা। 
এখন তারা স্বর্গলোকে, এ কথাটাই ভাবতে জাগে প্রীত,  
অন্যপুরে আমার জায়গা পাকা সে তো সন্দেহের অতীত। 

নামব, নাকি উঠব- সেটা অঙ্কে কষে বলা সহজ নয়, 
অন্তরকলন করার থেকেও লাগে এতে অদম্য প্রত্যয়;  
তাই ছেড়েছি তুলোট ভাবনা কালবোশেখির ভরকেন্দ্র ধরে, 
যেদিকে যাক, থাকব সাথে, মুক্ত কিছু এভাবেই তো ওড়ে। 

Monday, September 9, 2019

হেরো পার্টি

শেষ হয়েছে মোমজন্ম, মিমজন্ম এগিয়ে এলো দোরে
আমরা যারা বাস্তুহারা, এখনো যেন আটকে আছি ঘোরে। 
স্বপ্ন দেখি সবুজ আছি, সমাজ আজও আমার হাতের মুঠোয়; 
স্তোকবাক্য শেষ করে সব একে একে অন্যদিকে গুটোয়। 

আমরা তবু ছাড়ব না হাল, দেখিয়ে দেব গরম কেমন রক্ত। 
রাত্রিদিবা চাকা ঘোরার লড়াই করে সবাইকে উত্যক্ত
করছি, তবু থোড়াই কেয়ার; আমরা জানি আমরা সঠিক পথে,
যেমন করে লাল পতাকা সাত শতাংশ জোটায় কোনমতে।

আরো কত মিল আমাদের, নতুন যুগের ফস্কাগেড়োয় বন্দি।
তবু বাস্তবতার কোন স্তোকবাক্যে ঘটবে না আজ সন্ধী। 
মনের দুঃখে প্রলাপ করি, "সমাজ তোমার এ কী অবক্ষয়", 
আয়না বলে হেরো পার্টির চিরকালই ওরম মনে হয়!