Sunday, February 28, 2016

অছিলার খোঁজ

মনে রেখো প্রমূর্ত বেদনা
সমস্ত দিনের শেষে অপাপবিদ্ধ ওই পেলবের ঠোঁটে
কারো স্পর্শ স্থায়ী থাকবে না।
জানি আমি রক্তজবা ফুটিয়েছে তোমার ললাট
জানি আমি কৃষ্ণচূড়া জড়ো করে রাঙা দুই হাত 
তবু ইতি,
যদিও এ বসন্তের অভ্র মেখে নির্বিকল্প সমাধি পাবে না।



অপারগ অসম প্রেয়সী
অপেক্ষায় উপেক্ষায় বুঝি লাগল কলঙ্কের ছটা, চাঁদে
শুষ্ক হল হর্ষোজ্জ্বল হাসি।
জানি তুমি চেয়েছিলে অবিরত জোয়ারের স্রোত
জানি তুমি চেয়েছিলে অমারাতে ঝলসানো রোদ
স্বাভাবিক,
তবু কোন অছিলায় বলবনা কাকে ভালোবাসি।

যদিও বা নিষ্ফল বাসনা,
বাস্তবতা করোটির মোহ আবরণ নিল ছিঁড়ে, তবু
শৃঙ্গারের ত্রুটি রাখবে না
জানি আজ অতিক্রান্ত গোধূলিবেলার আহ্বান
জানি আজ সুসজ্জিত বাগিচা সে হয়েছে শ্মশান
জানি ইতি,
তবু আগামীর তরে নিম্নগামী হতে হলে বৃথা ডরাবে না।

Saturday, February 27, 2016

সিদ্ধান্ত

সাধ করে সোনার কলমে ভরেছি সুবর্ণরেখা কালি
মুক্তার অংশমিশ্রিত, তা দিয়ে চলবে না জোড়াতালি
তাই বুঝি থমকে বসে থাকা, যদিও আন্তরিক প্রয়াস
আপ্রাণ প্রচেষ্টা সংহতির, আপনাকে ব্যর্থ আশ্বাস।

তুমি বল এভাবেই হবে, সে মতে নিঃসঙ্গ তুমি নও
তবু সে বাক্যের তোড়ে আমি চেয়েছি ধরণী দ্বিধা হও
উপেক্ষা যে অসম্ভব লাগে, সিঁদুরে মেঘের সঙ্কেত
অভিজ্ঞতা এ কথাই বলে, জানি তবু থাকবে মতভেদ।

অনাদি অনন্তকাল ধরে, এমনই ভাবের আনাগোনা
তবে কোন সমষ্টিবাচক সিদ্ধান্তে আসতে চাইছি না।
সত্য যে প্রতিষ্ঠিত আছে, যদিও নিতান্ত ব্যক্তিগত
যদি তাতে সম্মতি থাকে তাহলে তুমিও সুস্বাগত।


Sunday, February 21, 2016

আহা আজি এ বসন্তে

আজকে আবার অমর একুশে, ভাষা দিবস, আন্তর্জাতিক!
আন্তর্জালিক বাঙ্গালী, তাই উপেক্ষা দুষ্কর।
কোন একদিন হয়তো আমিও সকালে উঠে স্ট্যাটাস দেব গর্বিত বাঙ্গালী বলে,
যেইদিন গর্বটা টিকে থাকবে ওই স্ট্যাটাসের মধ্যেই শুধু;
ততদিন পর্যন্ত ঢেঁকি গিলেই চলা,
সমগ্র ইতিহাস বুঝি নিমেষে চোখের সামনেতে, ক্যাপসুলে বন্দী হল বিশ্ববাসী দেখতে দেখতে।
আধুনিক প্যাকেজিং এ মুড়ে গেল, কতক অধ্যায়
তিলে তিলে গড়ে তোলা, কত প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির মিশেল;
অত কিছু জানাবার সময় বা পরিস্থিতি রয়েছে কি আজ?
অস্তিত্ব যে আজও বেঁচে সেইটুকু মহানুভবতা স্বীকার করেই শান্তি।
আমরা যে বিশ্বমানব, এর বেশী চাইতে লজ্জা করে-
বাজার নির্দিষ্ট করে দিয়ে গেছে নিজেদের মত, যে চুক্তিতে বিপ্লবী স্বভাবত সহজে সম্মত।
অনেক ঝরেছে রক্ত, ঝরিয়েছি,
সেই রক্ত মেখে জন্মও নিয়েছি আবার অজস্রবার।
তবু যেন প্রত্যয় ক্রমশ ম্রিয়মাণ,
অবশ্যম্ভাবী পরাজয় বাস্তব বলে খোঁজ করি না কোন মৃতসঞ্জীবনী সুরার,
সহস্র বছর ধরে সঞ্চিত কত সে ভাণ্ডার;
তাই বুঝি ছিটেফোঁটা করুণার বশে এক দিন, তা নিয়েই পরিতৃপ্তি, সহর্ষ, আনন্দে রঙিন।

Friday, February 19, 2016

কবি হয়ে ওঠার প্রয়াস

ছন্দ মিলছে তবুও যেন কবিতা হয়ে উঠছে না 
সুদূরপারি তবুও গাড়ি টগবগিয়ে ছুটছে না 
তেপান্তরের মাঠ পেরোলাম তবুও ডাকাত লুটছে না
জ্ঞানের বহর বাড়ছে তবু কলমে বোল ফুটছে না। 

চরমপত্র মাথার উপর তবুও তো ঝাঁপাচ্ছি না 
ভরা গাঙে বান এসেছে তবুও জল মাপাচ্ছি না
ভবিষ্যৎটা আঁধার তবু এখনো ভয় পাচ্ছি না
দ্বন্দ্বগুলো জমছে তবু এখনো হাল ছাড়ছি না।    

লাল ইশক

ভালোবাসা প্রেম নাকি শুধু শরীরের ডাক
স্বর্গীয় সুখ নাকি ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক
দ্বন্দ্বের অবসান হবে না, ধোঁয়াশা ছাই
তবু আজ বিপ্লবে অংশীদার হওয়া চাই!
অচেনা লোহিতকণা, সে আমার প্রসাধন,
বিপ্লব আঁকি তাকে সাথে করে মূলধন,
সে ছবির প্রেরণায় আমি সংগ্রামী বীর!
বন্দুক বুলেট সবই বয়ে চলে এ শরীর।
আঘাত হানব, তাকে যে নামেই ডাকা হোক,
জানি সে শুধুই প্রেম, যাই বলে ভদ্রলোক।
শুদ্ধতার বুলি ছুঁড়ে, যেভাবেই দেগে দিক,
সে ছিল বিপ্লব, নয় তো তারই আনুষঙ্গিক!

Saturday, February 13, 2016

দুঃস্বপ্ন

কোন স্বপ্ন নয়,  
স্বপ্ন খোঁজে বাঁধাধরা নিয়ন্ত্রিত পথ,  
নতুন চাইতে আর
পুরাতন অভিসার 
কেন ফের সওয়ারি সে গতিহীন রথ 
যার গন্তব্য শুধু ভগ্ন ইমারত। 

তবু নিতান্তই 
মধ্যমেধা চাষে আমি আহরিত জীব।  
ক্ষুদ্র গণ্ডীর মাঝে 
বদ্ধ হতেই সাজে,  
অতিক্রম স্বপ্ন ফের, কাজেই নির্জীব;  
সংকুচিত থাকা তাই আমার নসীব। 

অন্য কিছু চাই 
হদিশ অজানা যার, তাই লোভনীয় 
তারুণ্য, মোহময়? 
অনুভূতি নির্দয়? 
সেসবও অর্থহীন, নয় তো অমিয় 
কাঙ্ক্ষিত বরং হোক প্রেম অপ্রমেয়।  

তাও ছেঁদো লাগে 
কত ভেবে কিছু লিখি, তাও তো বিস্বাদ 
ভাবনা কাগজে যায় 
সাথে বুঝি কী হারায় 
গতানুগতিক ঢঙে নতুনত্ব বাদ 
ফের পারি সেথা, যার ভিত্তি অবসাদ । 

Saturday, February 6, 2016

অভ্যাস

প্রতি বছর কিছু কচি কচি ছেলেমেয়ে নতুন নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে
আমিও এককালে স্বপ্ন দেখতাম, কচি ছিলাম কি ছিলাম না তা এখন অবান্তর,
যদিও স্বাভাবিক নিয়মকে অগ্রাহ্য করতে পারিনি  -- দূর্বার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও,
স্রোতের সাথে ভেসে গিয়েছি স্বস্তিতে থাকব বলেই
কি অস্বস্তি তবু বয়ে নিয়ে চলা নেহাত অভ্যাসবশত
ছাড়ব ছাড়ব ছাড়ব, খেদোক্তি করেই চলি কেবল নিজের কাছে একান্তে
এমন কিছু কথা যা লোকচক্ষুর অন্তরালেই কেবল বলা চলে
কারণ অন্য কাউকে বিশ্বাস করার মত মহত্ব আর অবশিষ্ট নেই আমার মধ্যে।


তবুও ফের কচি কচি ছেলেমেয়ে মোহমুগ্ধ হয় কীসের নেশায়, জানি অথচ অজানা
বারবার ইচ্ছা করে তছনছ করে দিই এই কৃত্রিম মুখোশ
চেঁচিয়ে বলে উঠি আমি কিছুই বিশ্বাস করি না, আমায় বিশ্বাস করো না
কিন্তু অভ্যাস, বেঁচে থাকার পক্ষে জরুরী হয়ে গিয়েছে এই যৌবনযাপন
কারণ সে যৌবন আর অবশিষ্ট নেই যার বলে নতুন করে পথ চলার স্বপ্ন দেখতে পারি
তাই তোমাদের ব্যবহার করব, তোমার উদ্দামতা তোমার স্বপ্ন তোমাদের উচ্ছ্বাস
এই রসদটুকুই আমার চাই, বিনিময়ে তোমাদের কিছু দেব না,
তোমরা চাও না সেটাও আমার অজানা নয়, আমিও তো চাইতাম না একদিন।

আজও চাই না, তাও তোমাদের সাহায্যে বেঁচে আছি অন্যভাবে বাঁচতে আলস্য বলে
তোমরাও আমায় শেষ করে দিচ্ছ নিজেদের অজান্তেই
দুই পক্ষের সর্বনেশে খেলা, একপক্ষ জানে অন্য পক্ষ তাও না
তবু খেলতে খেলতে যদি সময় কেটে যায় অন্য কথা ভাবব কেন আর
এই দৈনন্দিন কচকচির বাইরে বেঁচে থাকা, আসলে সেটাও কচকচি তবু মুফতের কিছু ভালোবাসা
কারণ তোমরা জানো না আমার স্বরূপ
জানবে একদিন, তবে প্রবাহের পথে তোমরা তখন অনেকদূরে নতুনদের জায়গা করে দিয়ে
লকগেটে আটকা পরে আছি আমি কেবল, তবে তোমরা সেটা কখনো জানতে পারবে না।