Wednesday, August 16, 2017

আক্ষেপ

অন্তরে মেতেছি ভারি নিতান্ত বাধ্য হয়ে মিতে তোমার হৃদয়টুকু যদি আজ বিনাবাক্যে দিতে। সেই তো আচ্ছন্ন হয়ে থাকা কিছুক্ষণ অপেক্ষায়, এক্ষেত্রে কেবল তার সাথে কিছু অশ্রু মিশে যায়।

অচেনাই থেকে যাব একান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বে জানি, ভাবনা যে থেমে গেছে, অভাবেতে হয়ে অভিমানী, চাবিকাঠি হয়তো কিছু রয়ে গেছে, কিছু উপহার, আমি জানি, মুখ ফুটে চাইতে তবু বৈমুখ্য আমার।

মনোভব যদি কিছু বাক্যবন্ধে বলে দিতে পারি, শব্দের কারিকুরি, যাতে আমি নিতান্ত আনাড়ি, তা দিয়ে কিই বা হবে, হয়তো কিছু হিসাব বর্ধন, তারপর ধুলোবালি মিশে গিয়ে সেই তো জীবন।

বরং বিমুখ হই, অসতর্ক হই প্রতিপদে, বরং গরল হই মধুমাখা মন কোকনদে, তুমিও উপেক্ষা করো, স্বাভাবিক যেরকম হয়, এ কাহিনী আসলে তো রূপকথা থেকে নেওয়া নয়।

Sunday, August 6, 2017

স্বপ্নকবিতা


শব্দগুলো এদিক ওদিক কায়দা করে ছোড়া;
সাবধানতায় চূর্ণ করে, ফের লাগানো জোড়া।
স্বপ্ন নিয়ে থাকুক তারা, যেমন কুঁড়ি ফুটবে
ভবিষ্যতে কখনো নয় কবিতা হয়ে উঠবে।

আবার কিছু সময় এলো পালটে দিলাম অল্প,
আসতে আসতে উঠবে গড়ে ছোট্ট আমার গল্প।
কষ্টসাধ্য মানছি আমি, যৎসামান্য রেস্ত,
কাহিনী থাক নাই বা তাতে, আবেগটা যথেষ্ট।

শুকিয়ে যায় মাঝেমাঝেই, সামান্য জল ছোঁড়া,
আশাটুকু জিইয়ে রাখা, স্বপ্ন মাঝে ঘোরা ।
আকাশকুসুম হোক সে যতই, তারও তো শখ জাগে,
একটুখানি মেলবে ডানা ঘুমিয়ে পড়ার আগে।


অন্তিম শ্বাস

দিন আনি দিন খাই, যদিও অপর্যাপ্ত সংস্থান 
কিছু তো করতে হবে, তাই প্রাত্যহিক অভিযান। 
ক্ষতি কিছু দুনিয়ার আরেকটি যন্ত্রাংশ প্রসবে 
হিসাবের নিরূপণে যাকে দিয়ে লোকসান হবে।

এমনই অজস্র তবে, তাই বুঝি ব্যতিক্রম খোঁজা, 
 তাই বুঝি অগুনতি মানুষের ভিড়ে মাথা গোঁজা
অকিঞ্চিৎকর কোন উল্কাখণ্ড উত্তেজিত করে 
শিরা থেকে উপশিরা, উপোষীরা এমনই তো করে। 

একটুকু ছোঁয়া পাই, একটুকু কথা কথা শোনার আশ, 
ক্রয়মূল্য বাড়ানোর নির্লজ্জ অন্তিম অভিলাষ, 
পুঁজিবাদে মাথামত, এর চেয়ে ভাল কী বা হবে, 
মৃতপ্রায় পৃথিবীর সামাজিক মিলন উৎসবে। 

  

Wednesday, May 3, 2017

তোমার যাত্রা

তোমার অস্তিত্ব আজও সমান অস্বাচ্ছন্দ্যকর,
তোমার মন্তব্য ঘিরে অজস্র বিতর্ক আসে ধেয়ে,
ভাবলেশহীন কেউ নেই শুনে তোমার কণ্ঠস্বর,
এ কোন মন্ত্রবল আয়ত্ত করেছ তুমি মেয়ে?

হারিয়েছ বহু কিছু, প্রেম-অপ্রেম স্বাধীনতা,
পেয়েছ আবার তাইই, আদপে যে স্বল্পমূল্য নয়-
সে কথা শিখেছি করে প্রত্যক্ষ তোমার বারতা,
শিক্ষয়িত্রী! এ সমাজে সেও তো তোমার পরিচয়।

ঘাতপ্রতিঘাত মিলে করেছ চয়ন অভিজ্ঞতা,
মানবীয় স্পষ্টরূপে, যদিও নিঃসন্দেহে অপ্রমেয়
কে তার নির্ণয় করে, পরীক্ষায় কার বা ক্ষমতা
অনুসন্ধিৎসা জাগে কী যে ছিল তোমার পাথেয়?!

শুরু করো বারবার, হয়তো জেনেই ক্ষণস্থায়ী,
ক্ষতবিক্ষত হলে বহুধা, হিসাবও অপ্রতুল;
তাও শিখি, উদ্যম, প্রত্যাশা, অন্তহীন রাহী,
স্মৃতির গহীনে ভাসে হে রুদ্র কবুল কবুল।

   

Friday, March 24, 2017

আসি

হয়তো প্রয়োজন আজ নিঃশেষিত সম্পূর্ণ রূপেই, 
ভালো থেকো এটুকুই বলব এই চৌরাস্তায় এসে, 
আগামীর শুভেচ্ছা যে এখন আর আবশ্যিক নেই 
সেটুকু আমিও বুঝি, এত অভিজ্ঞতা পরিশেষে। 

শব্দবন্ধ নয় জানি শাণিত কঠিন ইস্পাত, 
শক্ত মাটিতে তার প্রতিক্রিয়া নিতান্তই ক্ষীণ।
স্বগতোক্তি করছি না, করছি না অভিসম্পাত, 
এখন আমার কাছে তোমরা অস্তিত্ববিহীন।  
 
কুয়াশা ভেব না একে প্রখর গ্রীষ্মের দাবদাহে, 
মায়া তুমি কায়াহীন সারগর্ভ উপলব্ধি এবে।  
অনুভূতি-তর্পন সমাপ্ত খরস্রোত প্রবাহে, 
আর কোন লাভ আছে  পুনরায় তোর কথা ভেবে?  

Wednesday, March 22, 2017

অপচয়

কবিতা দিবস চলে গেল নিষ্ফলা, 
সংহতিটুকু সময়ের সাথে ম্রিয়, 
পদবীটুকু সে যাই হোক, নিচুতলা
জুটবে কেবল গেরুয়া উত্তরীয়। 

কিছু কথা যায় এভাবে অন্ধকারে, 
দিকনির্দেশ হয়ে গেছে বহুদিন, 
সমাজের কথা কে আর ভাঙতে পারে, 
থেকে যেতে হবে অনামি গোত্রহীন। 

গাত্রদাহের কারণ তবুও ছিলে, 
কিছু পদাতিক কেমনে না জানি হয়, 
শুধু ভেবে দেখ সমাজের মেহফিলে 
আসলে তুমি তো নিষ্ঠুর অপচয়। 

সে সমাজ আজ ন্যস্ত অন্য কাজে, 
সহযোদ্ধার হাজার একটি বর্ম, 
আমারই মতন নিজ ফুরসৎ মাঝে
নাটকীয় চালে চালাবে শিল্পকর্ম। 

Thursday, March 9, 2017

পথে

অসহিষ্ণু পরিবেশ আমাকে অস্থির করে তোলে,
হারিয়ে ফেলেছি কিছু অজান্তেই বহুদিন আগে,
মাঝে মাঝে মনে পড়ে ভেসে থাকা কান্নার রোলে,
মানবতা একদিন ভরা ছিল আদরে সোহাগে।

চলে গেছে, স্বাভাবিকই- এতদিন কেন ছিল ভয়ে;
এতো যুগ ধরে কিছু শেখেনি কি বৈধ নিয়ম?
অস্তিত্বসংকট, তবু বুঝি টিকেছে, বিস্ময়ে
আবিষ্ট হই বুঝি? হয়তো বা বাস্তবিক ভ্রম।

তোমার দর্শন নিয়ে উত্তর মিলবে না সহজে,
উপপাদ্য লাগাবে যে,  আছে কিছু পূর্বধারণা?
প্রতিকূল দৃষ্টান্ত, প্রতিপদে, তাই নিয়ে মজে
যা কিছু নির্ণয় কর সবই হোক ব্যর্থ আরাধনা।

তবু যেন মনে হয় ঠিকই চলি সৃষ্টির সড়কে,
নাহলে তলিয়ে যাব অন্ধকার অতল গহ্বরে,
হতে পারে ভুল ভাবি, তলিয়ে গিয়েছি প্রেতলোকে,
অন্য পথে তুমি নয় পাড়ি দাও আগামীর ভোরে।

হয়তো দেখবো শেষে পৌঁছেছো উজ্জ্বল প্রভাতে,
আমি সেই হাতড়াই ধ্বংসপ্রাপ্ত নিষ্ঠুর অতীত।
হয়তো দেখব তুমি ঠিক ছিলে তোমার বার্তাতে,
অসম্ভব যদিও তা সে বিষয়ে আমি তো নিশ্চিত।

বাকযুদ্ধ অসমাপ্ত থেকে যাক, ফের অবসরে;
বিতর্কের উল্লাসে কথা দিচ্ছি আবার মাতবই,
কিন্তু সময় কই রণতরী এসে গেছে চরে,
তত্ত্বের থেকে নয় ফলিতেই একবার এগোই।

Sunday, January 29, 2017

পরে

আমার কবিতা নয়, 
হয়তো শোনাবো পরে, পৌঁছিয়ে ব্যাপ্তিতে;   
অথবা তার অল্পদিন আগে।  
আপাতত শুধু পাঠ,  
তেপান্তরের মাঠ পেরোতে যে বহুদিন লাগে। 

অপেক্ষাও শিক্ষণীয়, 
সে তোমার অনুমেয়, বুঝেছি সহজে,  
যদিও সরলরেখা নয়।  
তবু কোন মায়াবলে,  
ভাবনার ছায়াতলে রুখেছি এটুকু অবক্ষয়। 

জানি আজ জন্মদিন, 
সুদূর প্রবাসী বীণ বাজবে বিতানে,  
যেখানে যা সম্ভবপর।  
তবু থাকো অপেক্ষায়,  
যতদিন থাকা যায়, তারপর মুক্ত অম্বর। 

খোলা আকাশের নিচে,  
ঘটে যাবে কত কী যে, সে ভেবেই উৎফুল্লতা।  
স্বাভাবিক হৃদয়ের পথ;   
সেই ভেবে খুশি থাকা,  
ক্ষতটা প্রলেপে ঢাকা, দৃঢ় থাক এটুকু শপথ। 

Monday, January 2, 2017

অমৃতের পুত্রকন্যা

আজ আবার একটা কবিতা পড়লাম ফেসবুকের দেওয়ালে, 
জঘন্য লাগল, 
তবু অনুপ্রাণিত হয়ে গেলাম এক সমালোচকের কথা শুনে। 
লিখছি আবার, যদিও কবিতা লেখার অক্ষমতা সম্পর্কে নিঃসংশয় হই প্রতিনিয়ত। 
প্রচলিত গতিতে কোন ব্যতয় ঘটাতে পারবে না আমার অপুষ্ট কলি, 
বাঁচার তাগিদে লিখে গিয়ে বরং তাদের প্রাণসংশয় হয়ে ওঠে আরো ত্বরান্বিত। 
কিন্তু ওই সমালোচনা, আছড়ে পড়ুক আমার ওপরে, 
ওই আমার বিশল্যকরণী, আরো কয়েক দাগ পড়লে যদি ফিরে আসতে পারি বাস্তবের পথে, 
লিখে যেতে হবে তাই অমৃতের আশায়। 

চারা গেঁথে বসে থাকি, সময় এখন অফুরন্ত আমার হাতে
অবাস্তবের জীবনে বিচরণের একমাত্র আনন্দদায়ক পার্শপ্রতিক্রিয়া 
বহুল প্রচলিত অন্তঃমিলসূচক শব্দটিও মাঝেমাঝে হার মানবে সে আনন্দের কাছে 
তবু ছেড়ে যেতে চাই।  
বাস্তবের খোঁজে নয়, বরং বাঁচার আশায়। 
বা স্থিতিশীলতার থেকে দোদুল্যমান হওয়ার শখে, 
নাহলে একঘেয়ে জীবনে ঘেমেনেয়ে একশা। ঘৃণা করতে শুরু করবো নিজের ঘামের গন্ধকে। 
সুগন্ধী অগরু কেনার সামর্থ্য গড়ে তোলা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সে পরীক্ষা শুরু করার আগে। 

তোমাদের মত করে লেখার লোভ হয় নিঃসন্দেহে, 
কিন্তু কেমন মিইয়ে যাবে বুঝতে পারি, আঁচ নেই আমার, তোমাদের মতই। 
তাও ঘুরে ফিরে দেখি, তলায় কোন অংশে যদি সেই আগুনের প্রদীপ্ত শিখার খোঁজ মেলে। 
হতাশ হইনি আজ, তাই এতো উত্তেজনা। 
আশ্চর্য হই, সে বয়স নেই আমার, তবু নিজেকে ফাঁকি দিই
নিজের কাছেই নিজের নির্লজ্জতার সীমা না রেখে।   

কয়েক ছত্র অভ্যাস ভাঙতেই

চেষ্টা করলে হয়তো আজও গুটি কয়েক ছত্র দেব লিখে, 
উল্টে পাল্টে হরিচরণ চলন্তিকা নিদেনপক্ষে রবিবাবুর বই; 
কিন্তু তাতে হবেই বা কী, সেই তো যাবো আস্তাকুঁড়ের দিকে, 
তাই পড়ে কি আমার শবে ওড়াবে কেউ আমন ধানের খই? 

বিপ্লব নেই অভিনব, কিছুই তো নেই ছন্দটুকু ছাড়া, 
প্রবুদ্ধ যে হবো তারও খোঁজটুকু নেই আমার আপাতত। 
কয়েক পাতা রুদ্র এবং হয়তো কিছু ভাস্কর, খাপছাড়া, 
তারপরে সব অন্ধকারে, যদিও এখন বাংলা ভাষায় রত।   

ক্ষতিবৃদ্ধি হয় না জানি, হলেও বিশেষ ফারাক হতো নাকি? 
হাল ছাড়িনি, ধরাই আছে নিখুঁত দিশা সর্বনাশের পথে।  
ত্র্যহস্পর্শে জন্ম হওয়ার কপাল যখন, আর কতটা বাকি? 
হয়তো নতুন সভ্যতাতে পৌঁছে গিয়ে জিতবো ভবিষ্যতে।