Saturday, December 24, 2016

চলার পথে

লিখছি অনেকদিন, একেক সময় বেগ আসে,
আবার ঝিমিয়ে পড়ি।
হয়তো পরিবর্তন এসেছে শব্দাবলীতে, চিন্তাগুলিতে, জ্ঞানের থলীতে;
 হয়তো আসেনি,
আসেনিই মনে হয় -- বিচারকের আসনে যে কেবল আমি, 
আমির কাছে আমি তো আমিই থেকে গিয়েছি
পরিবর্তন আসুক বা না আসুক, পরিত্রাণ তো সাধ্যের অতীত।
পরিচিত সত্ত্বাকে চেনা স্বস্তিদায়ক, আরামদায়ক, অক্লান্তিকর,
নিরর্থক অতীতের ঝাঁপিতে হাত ঢোকানো আর হয়ে ওঠে না তাই।
কোন কালসাপ হয়তো ফণা তুলে অপেক্ষারত সেই গোপন কুলুঙ্গিতে।
তার বিষের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে---
হয়তো এক আমির কাছে, যার কাছে ফিরে যেতে পারি কেবল একটাই শর্তে।
সেই শর্ত কিছুই না, কেবল স্বাভাবিকতা।
কোন নৌকা চরব না, কোন মেট্রো ধরব না, কারো ধাক্কায় নড়ব না।
তাও যদি পৌঁছে যাই অচিনপুরে তবে খুশিমনেই মেনে নেব আমার প্রারব্ধকে।
পরিত্রাণ সাধ্যের অতীত? এক সে হতে পারে ধ্বংসের মাধ্যমে।
তবে সেই পরিশ্রমটুকু যদি মেনে নিই
তবে তো আরো কত কিছু, কত ফেলে আসা বাঁক, কত ঝুরঝুরে টিলা, কত ভাবনার অছিলা--
ঘুরে দেখে আসবো নাকি আরেকবার?
প্রতিটা পদক্ষেপ, ফেলে দেখব নাকি অন্য ভাবে?
কবে এসে ফিরতে পারবো এই সুবাসিত বন্দরে?
হয়তো অনেক সোজাপথে চলে এলাম আবার জীবনের এই দোরগোড়ায়।
আশ্চর্য তো কম হলাম না এই জীবনে,
আশ্চর্য হই-- অভ্যস্ত হই, তবু পুনরায় আশ্চর্য হই বৈচিত্র্যের কাছে।
পরাবর্তন হয় না, সেই বৈচিত্র্যেরই কাছে।

Wednesday, November 16, 2016

পৌরুষ

আমার পৌরুষ আজও অজান্তে আমার অহংকার।  
অজানাই থেকে যাক এইটুকু আকাঙ্ক্ষা হৃদয়ে, 
ছাই চাপা থাক আপাতত পরে নাহয় বিস্তার, 
সজ্ঞানে অহমিকা অবিশ্রান্ত, দৃষ্টিকটু নয়? 

অল্প নেশাগ্রস্ত হয়ে রঙ্গমঞ্চে এবং তারপরে 
অমন্দীভূত হোক প্রবল পৌরুষের প্রবেশ,  
জুটে যাবে অজস্র চাটুকার মৌলাভের তরে। 
অতঃপর বিভ্রান্ত প্রতিপক্ষ, যা ছিল উদ্দেশ। 

নিজেকে ভাঙতাম হয়তো, তারও মাঝে আছে অভিমান 
চিত্তাকর্ষকও বটে, তবে তার যোগ্যতা লাগে 
সামান্যেই যদি হয় কল্পিত মহাপ্রস্থান, 
পরীক্ষার খাতা তবে তোলা থাক দেরাজের তাকে।  

Saturday, October 22, 2016

ইলহাদ

শুধু ঈমানের গেলমানি করি তবু অতৃপ্ত প্রাণ;  
কোথায় কাফের কোথা মুশরিক,
চারিদিক খুঁজে পাই নাকো শির্ক,
ধুধু প্রান্তর, অন্তরে ঝড়- ছবি তোলে আসমান।
এত কিছু পরে কই ইনসাফ, কোথায় ইন্তেহান। 

রুহ কোথা যাবে, বড় সাধ মনে, আলা-এ ইল্লিয়্যিন,
বিদআত করি সে দিবস পালনে,
কিছু গ্লানি তাই থেকে যায় মনে,
বুঝি নিয়তিতে লেখা আছে তাই আসফালা সালেফিন।
তবু হতাশা সে হতেই পারেনা হৃদয়ের অন্তরীণ।

ঈমানি জীবন, দারুল ইসলাম, আর সব কিছু বাদ,
তবে কেন সন্দেহ জাগে প্রাণে,
তফসির আর হাদিস কোরআনে,
কেন ব্যত্যয়, গ্রাস করে কেন প্রশ্ন- ইর্তিদাদ!!
দ্বীনেরই সেনানী আমিই তবে কি আগামীর মুর্তাদ?!



Tuesday, October 4, 2016

জয়ী

দৃশ্যতই পরাজয় আর হয়তো কিছুক্ষন পরে,  
সরবরাহ নিঃশেষিত, নিষ্পেষিত সমগ্র সেনানী। 
সে প্রাণের দায়ভার কিছুটা তো নিশ্চিত আমারও,  
উপেক্ষায় সংঘটিত রক্তের প্লাবন আমি জানি। 

 দুর্নিবার স্রোতে ভাসি, অপার্থিব সুখ-অনুভূতি।  
রক্তিম হয়েছি যে তা অতর্কিতে আপনি বিস্মৃত। 
শৌর্য বা শঙ্কা সবই নিষ্যন্দিত জোয়ারের কোলে;  
পরাক্রম যোদ্ধা সেই ভেসে গেল বিজিতেরই মত। 

কত খাল,  কত বিল, লোহিত সাগরে গেল মিলে,  
কত রাজ্য জয় করে অন্তিমে প্রবল নিঃসঙ্গতা।  
কিছুটা সময় যদি ব্যয় হতো হৃদয় মঞ্জিলে -- 
হয়তো বা যাত্রাপথে সঙ্গী হতো কিছুটা পূর্ণতা। 

Wednesday, September 14, 2016

শক্তির আরাধনা

তোমার প্রিয় হারিয়ে যাওয়া চাবি 
যখন থেকে আমার পাদোদক,  
তখন থেকে অজান্তেতেই আমি 
একান্ত এক শক্তির উপাসক। 

অশাস্ত্রীয় সেসব আরাধনা 
অর্ঘ্য সেথায় শব্দবন্ধ, কলি; 
সেই সাধনের প্রসাদ পেতে হলে
যেতেই হবে অবনীদের গলি। 

রাস্তা এখন ক্রমশ অজ্ঞাত 
কালের স্রোতে কোন কিছুই রয় না 
ভেবেছিলাম সহজে পথ পাবো,
শক্তিপূজা এভাবে ঠিক হয় না। 

Saturday, August 27, 2016

রহঃ ধৈর্য্যং

এমন শব্দের খোঁজ চাই, যার আঘাতক্ষমতা 
সহস্র অসির চেয়ে তীব্র, শুধু আক্ষরিক নয় 
চিহ্নিতকরণ হোক তারই সাথে, জয় মানবতা,  
তারপর গাণ্ডিবে ছিলাটান, তুন অক্ষয়।  

পরাভূত এযাবৎ, অন্বেষণ অনিষ্পন্ন আজও 
পর্বতসমূহ মাঝে খুঁজে চলা বিশল্যকরণী।  
অবিশ্রাম অভিঘাত, উপরন্তু সুষুপ্ত সমাজও 
শূন্য উপত্যকা মাঝে অণুরিত ব্যর্থ প্রতিধ্বনি। 

যদি হতো সংরক্ষণ, সামান্য সে আশার অঙ্কুর 
অন্তহীন অপেক্ষায় সহিষ্ণুতা হতো পরীক্ষিত, 
মরীচিকা তার চেয়ে বাস্তব-- যতই ভঙ্গুর;    
কিম্বা বাঞ্ছনীয় হওয়া বিমূর্ত মায়ায় দীক্ষিত।

Sunday, July 24, 2016

আড়ি

কে যে আলোচনা করে, 'অবশেষে পেয়ে গেছি বাগে, 
অলাতচক্রের সামনে আটকে সে', প্রছন্ন দেমাগে।  
ফুলকি কিছু টুকরো ছোটে, আমি আজ রহু চণ্ডাল 
পেয়েছে নেশায় বড় শোণিতের, তার স্বাদে মাতাল।  

এ আমার বুড়িগঙ্গা, রুগ্ন অর্ধমৃত সরস্বতী
এ আমার হিমালয়, বিন্ধ্যাচলের দুর্মতি। 
আপাতত শবাসনে চিন্তাশীল প্রশান্ত বিরতি--  
চঞ্চলতার জন্য প্রতীক্ষায়, হয়তো অধোগতি। 

আলোচনা চলবেই, যতদিন বাঁচি কিম্বা মরি,  
চিতায় জ্বলার আগে কত খই, কতটা শ্রীহরি     
তা নিয়েও হিসাবের খাতা আছে দেরাজের থাকে, 
যদিও সে পূজা থেকে বঞ্চিত পয়লা বৈশাখে। 

Saturday, July 16, 2016

পূর্ণিমা

বিনিদ্র রাত, মধ্যগগনে
পাক্ষিক অভিশাপের স্খলনে
ভেসেছি কিরণে, তবু আনমনে; নির্দয় বুঝি পূর্ণিমা এইবার।
তবু ঝলসানো রুটির খেয়ে বাঁচা,
অচিন পাখির আশ্রয়ী খাঁচা--
ধ্বংসপ্রাপ্ত ইমারতি ধাঁচা বয়ে নিয়ে চলা আমাদেরই অধিকার।

কখন ধরব টুঁটিখানি চেপে
কখনো পদক্ষেপ জল মেপে
নিয়ম ভাঙব প্রতি প্রক্ষেপে; বস্তুবাদের কৃত্রিম প্রতিরূপ ।
প্রশ্নত্তোরপর্ব বেলায়,
অথবা অনির্দিষ্ট খেলায়  
বাধা দেব আমি নানা অছিলায়, বড় প্রিয় আজও আমার ধ্বংসস্তূপ।  

কলঙ্কিত সে নানা অনুছেদ,
সাথে জমে থাকা পার্থিব ক্ষেদ--
ভীতি জাগায় না আর উচ্ছেদ, উদ্বাস্তু এ জীবনের আশ্বাস।
কড়ি না ফেলেও মাখি তাই তেল
প্রতিপদে খুঁজি ভানুমতী-খেল
মরীচিকা দেখে নই উদ্বেল, পূর্ণিমা তাই আপাতত পরিহাস।
 
 




Sunday, July 10, 2016

সুদর্শন

মহামন্ত্র? আমি ভাবি আন্তরিক মধু-সম্ভাষণ
আক্ষরিক অর্থে বুঝি এলোমেলো হয়েছে জীবন।
কৃষ্ণনামে দিগ্বিদিক আপ্লুত, তুরীয় সে স্থিতি
এ কী যাদু বিস্ময়ে করেছে প্রত্যক্ষ প্রকৃতি।
ষোড়শোপাচার নেই, নেই কোন মহা আয়োজন
দার্শনিক দ্বিধাদ্বন্দ্বে বন্ধ নেই মন-বাতায়ন,
প্রেমের তরণী শুধু ভেসে চলে অনন্তের পথে
সেই নামে, বাঁধা থাক আজকে যা সংগুপ্ত শপথে।
একদা দ্বাপরে ছিলে রাধিকার নয়নের মণি,
কলিযুগে পুনরাগমন সাথে করে হরিধ্বনি।
ঘুরেছে রথের চাকা, এইবার টেনে ধরো রাশ,
উত্তর তোমারই কাছে, রঙবেরঙের সন্ত্রাস।
জানি তুমি সহ্য করো, ভয়াল রূপের পরিচয়
রেখেছ অজানা, তবু মাঝেমাঝে প্রয়োজন হয়।
সুদর্শন এসো আর প্রতি পদে ভুক্তাবশেষ
প্রতিহত হোক, সাথে শুদ্ধ হোক এই পরিবেশ।
জানি তার নিয়ন্ত্রণ অসম এ মনুষ্যের হাতে,
প্রতারণা করব না পুনরায় বাস্তবের সাথে।
ছলনায় মাতি না আর, তরী বাই বিশ্বাসের হ্রদে,
সব ছেড়ে সমর্পণ তোমার ওই রক্তিম শ্রীপদে।

Monday, June 20, 2016

অস্থির আয়নায়

চারদিকে অভিনব হানাহানি গ্রাস করে নেয় সখ্য,  
সত্যি এবার কলমে জমেছে অনাহূত বার্ধক্য।  
সত্যি এবার আগুন লেগেছে স্নায়ুকেন্দ্রেতে দুর্বার,  
ছারখার হব জ্বলেপুড়ে, আর হবে এ পৃথিবী চুরমার। 

সুশীতল কোন ছায়াতল খুঁজি বর্ধিত কিছু সময়ের,   
মরবার আগে কত কিছু বাকি, তাই চাই কিছু হেরফের।  
যদিও বুঝেছি অবচেতনে সে রয়ে যাবে ঠিকই পিছুটান,  
তা না হলে বৃথা জীবনের সব বৈচিত্র্যরই অবসান। 

কিছুটা হতাশা, প্রবল লড়াই, জমা হয় ছাই চাপা ক্ষোভ,  
জানি সব কিছু আমারই কীর্তি, তবু করে চলি দোষারোপ। 
ক্ষয় চলে তারই মাঝে, তার কোন নেই বিশ্রাম, ক্লান্তি 
চলুক না হয়, তারই হাত ধরে যদি ফেরে চিরশান্তি।

Wednesday, June 1, 2016

খিড়কির দোর

হ্যাঁ আমি চাইছি 'ঘৃণ্য' ফ্যাসিবাদ, আজকে দাঁড়িয়ে,
স্পষ্ট বলবো, কোন রূপকের মোড়ক না দিয়ে।
সাজানো মিথ্যার কত ফুলঝুরি প্রতি অবস্থানে
বৈধতা পায় রোজই অজস্র বলিষ্ঠ ফরমানে।

রায় যদি ঘোষণাই হয়ে গেল তবে কেন আর,
অন্তত দোষটুকু করে হই তার ভাগীদার,
অন্তত কিছু মধু খাই রণহুঙ্কারের আগে,
তাহলে যদি বা একে তোমাদের গণতন্ত্র লাগে।

দাপট চারণভূমি সৃষ্টি করে চলে দিক্বিদিক,
আদপে পছন্দ বুঝি আমাদের একমাত্রিক।
লক্ষ্য এখন তাই ক্ষমতা হস্তান্তরে যুদ্ধজয়,
মনস্তত্ত্ব বদলাতে আজও শুধু বিরক্তিই হয়।





Sunday, May 22, 2016

কেয়ামত

দুরু দুরু রবে কাঁপছে ভূধর, বাংলার মাটি লাগবে জোড়া
ওই বুঝি আসে খোরাসান হতে বখতিয়ারের পাগলা ঘোড়া
আরব তুর্কি পাঠান মোগল আর যত কিছু এসেছে আগে
তারই রেশ ধরে সমুজ্জ্বল আজ বাংলার মাটি অস্তরাগে।

আজানের সাথে শুনি যেন ফের গগন ভেদী সে সিংহনাদ
কেয়ামত কাল এলো বুঝি শেষে, এবার রচিব আল-জ্বিহাদ।
আত্মশুদ্ধি, চিত্তশুদ্ধি, এইবার মোরা অকুতোভয়
হাশরের মাঠে উদ্দাম আজ, কোন মিথ্যার বেসাতি নয়।

রক্তর স্রোতে অজু করে বুঝি পবিত্র হল পুণ্যভূমি
কত শত জেনা, কুফরি, হারাম- গতিরোধ করে বাঁচালে তুমি।
নব অরুণের সূচনা লগ্নে ওই দেখ করে সে মোনাজাত,
অবশেষে বুঝি নবীন আনন্দে আদায় করবো আজ সালাত।


Thursday, May 5, 2016

বাজী


দুনিয়ার মাখামাখি
নিজেকে তফাতে রাখি
বাঁশীতে বাজিয়ে চলি বেখেয়ালি আনমনা ধুন
আমি যে মানুষ নই, বলেছিল নির্মলেন্দু গুণ।

অমবস্যার গেরো
ল্যাদ লাগে জোনাকেরও
দুনিয়া যেমনই থাক, আমার কিই বা আসে যায়
চোখেতে সামান্য ঠুলি-- আমাদেরও ক্ষমতা সহায়।

নীতিবোধ? ছেঁদো বুলি
গেলো  আফিমের গুলি
অবশেষে শেষপাতে বাজী রাখো সব মূলধন
তাতেও কাজ না হলে ব্যর্থ তোমার এ জীবন ।

নিরপেক্ষতা বলি,
বুঝেছ জানি সকলই
উপেক্ষা হয়তো বা আপোষ সে ক্ষমতারই সাথে
জানি অমানুষ তবু ক্ষেদ নেই একফোঁটা তাতে।

Wednesday, April 27, 2016

উড়ান

সত্যি হেরেছি হয়তো,  
বিস্তৃত দিগন্ত পানে অকপট দৃষ্টিনিক্ষেপে  
এই কৃষ্ণ অমারাতে । 
লুকিয়ে এসেছি একা 
সবার অগোচরে শুধু অনন্ত উড়ানের আশায় 
কালবৈশাখী ঝড় যদি তার স্রোতে আমাকে ভাসায়। 

ক্রমশ আবদ্ধ হল, 
মানবজীবনে তাই প্রখর রোদের তাপে জ্বলে, 
আন্দোলন হীন। 
অক্ষয় দমন উৎপীড়ন 
নিতান্ত বাধ্য হলে সামান্য উৎকোচসম বৃষ্টির প্রয়াস 
কালবৈশাখী তবু ব্রাত্য থাকে, রুখে দিতে কোন উচ্ছ্বাস। 

তবু বারংবার যাবো, 
করুণা না, বাস্তবিক পরিবর্তন  প্রত্যাশী।  
দৃঢ়সংকল্প জানি।  
আমিও হতাম তাই  
তোমার অবস্থানস্থলে, তবু চাই আজকে স্খলন 
কুহনিকা যাই হোক অপরাধবোধে নেই মন।   


Saturday, April 23, 2016

কথোপকথন

মিত্র, আমি তোমার জন্য গাঁথিয়াছি মালা প্রণয় পরশে রঞ্জিত ডালা এবার তোমার রচিবার পালা প্রেমভৈরবী চিত্র।

মিত্র, আমি ঘন আশ্লেষে চুমিয়া অধর, হেরিয়া বেরাই ধর-অম্বর জীবন সলিলে তোমারেই শুধু হৃদয়ে মানি তরিত্র।

মিত্র, আমি দর্পণ পরে হেরি আপনারে তোমার স্পর্শ খুঁজি বারেবারে অন্বেষী আজও তোমার চিত্তে প্রবেশপথের ছিদ্র।

সজনী, আমি তোদের আবেগে খোরাক মেটাই, প্রেম আলপনা ধুয়ে মুছে যাই উদ্বেগে করি কেয়ার থোড়াই, বুঝল যদিও কজনই!

Sunday, April 10, 2016

মানবতার পাঠ

দু এক কণা তপ্ত অশ্রুজল
মানবতার এইটুকু সম্বল
সঙ্গে আছে দেদার ভালোবাসা 

বিন্দু থেকে সিন্ধু গড়ার আশা। 


মরল চাষা সঙ্গে নিয়ে শেষে 

শিখেছে যা জীবনজ্বালে ফেঁসে 
মরবে আবার, এটাই তাদের গতি 
জীবনে যার অনিশ্চিত মতি। 

উষ্ণতার আজ সর্বব্যাপী গ্রাস 

থেমে থেমে গেরিলা সন্ত্রাস 
শুকিয়ে গেল সকল জলাশয় 
মানবতার ভাগ্যে এটাই হয়। 

যুদ্ধে যখন ফল ঘোষণাই বাকি 

শিবির তবে বদলে ফেলি নাকি? 
পরে নাহয় গল্প লেখা যাবে 
 মানবতার, পাঠক যেমন খাবে।  

Wednesday, April 6, 2016

বসন্ত

আমার কথায় কি খুব বিরক্ত হও, অন্তত চোখে পড়ে না
তাই আশঙ্কার কালো মেঘ ছেয়ে ফেলে মনকোণ
যার আবছায়ায় আমার অজান্তে পুঞ্জিভূত হতে পারে বিরক্তি
তিল তিল করে জমতে থাকা অস্থিরতার পাহাড়
ক্রমেই অসহ্য হয়ে ওঠে, দৃষ্টিশক্তি বিদ্রোহ করে ওঠে সহনশীলতার বিপক্ষে
টানেল গড়তে হবে ওই পাহাড়ের মধ্যে
কিন্তু নিশ্চয়তা কী যে সে গ্রাস করে নেবে না শ্রমিককেই
আঘাত হানতে হবে হয়তো তখন বাধ্য হয়েই,
ধূলিসাৎ করবার অভিপ্রায়ে,ছিন্নভিন্ন করতে দৃষ্টিসুখের উল্লাসে।

তাই বলে আরও বেশী ভালোবেসে ফেলো না যেন,
এই প্রলয়ের মাঝে সে অনুভূতির প্রতি আর কিছুর সময় থাকবে না
অনন্যোপায় আমি, দায়িত্বে অবিচল থাকা আমার দুরারোগ্য ব্যাধি।
অবশ্য যদি উর্বর ক্ষেতে কয়েক ফোঁটা ভালোবাসা
জন্ম দিতে পারে সুবৃহৎ প্রেমবৃক্ষের তাহলে আপত্তি করবো না।
তার ছাওয়ায় অনুরাগের আচ্ছাদন, লালিত সযত্নে
তার মুকুলে অঙ্কুরিত প্রণয়প্রীতির কুঁড়ি, পল্লবিত ঋতুপর্ণ
ভালোবাসার ফুল ফল অফুরন্ত যোগান দেবে তরতাজা প্রেমের,
ভালোবাসার রেণু ছড়িয়ে পড়বে আদিগন্ত বিস্তৃত চেতনার মত
এমন বর্ণময় বসন্ত এলে কি আর আধমরাদের আপত্তি করা সাজে? 

Saturday, April 2, 2016

পক্ষাবলম্বন

রক্ত জমাট বাঁধা, রাজপথ তাতেই পিচ্ছিল
আমাদেরই কৃতকর্ম অগুনতি মৃত্যুর মিছিল
মনুষ্যত্ব মৃতপ্রায়, আর শুশ্রূষা নিরর্থক
রক্ত আমারও হাতে তা দিয়েই কেটেছি তিলক।

শূন্যতা, অবসাদ, প্রাণপণ বাঁচার আকুতি
স্বীকার করি না তবু, পাছে ব্যথা পায় অনুভূতি
চলতে হবে যে তবু, এর চেয়ে উপেক্ষাই সই
তাই দিয়ে কিছুদিন আনন্দে জীবন কাটাবোই।

হাজার রক্ত হাতে, অশ্রুজলে মুছবে সে দাগ
অন্ধকার পৃথিবীতে সহজে মিলবে না চিরাগ
বিপরীত পথে তাই হোক সে বাঁচারই সম্বল
বরং ক্ষমতা হাতে পিষে দেব সব গণ রোল। 

Monday, March 28, 2016

ভাঙা বেড়া

অনেক আশা, শুরুতে ছিল বটে কিন্তু স্বাভাবিক প্রবণতা 
কয়েক শতাব্দীর সাফল্য এটুকুই, আট সংযোগ প্রকৃতির 
মেঘে পানে একবার চেয়েই বুঝে গিয়েছে সে 
পারবে না! 
শোষিত নিপীড়িত বঞ্চিতদের কাহিনী থেকে যায় না কওয়া হিসাবেই। 
তাদের চোখের জলে ফুটিয়ে খাওয়া দুই এক কণা ক্ষুদ, 
মাটির গভীর থেকে তুলে এনে খাওয়া বুনো ওল, 
ঙ্গের মেশানো কয়েক ফোঁটা লেবুর রস
মিশে যায় আবার সেই মাটির ভীতরেই সার হয়ে, 
বোধকরি তাদের অন্তঃসারশূন্য করে। 
সেই গল্পে আগ্রহ নেই আধুনিক কেতাদুরস্ত কোন বঙ্গজীবীর।
 একরাশ হাহুতাশ বাষ্পের মত উবে যায় তার চিতা থেকেই। 

বাস্তবের মাটি থেকে উঠে আশা চাপা ক্ষোভ, 
বৈচিত্র্য খোঁজার অনভ্যাস হতে পারে 
কিন্তু এখনো নির্বিরোধী সহজ সরল জীবনযাপনই অন্তিম লক্ষ্য। 
সাধারণত্ব আপনার কাছে একঘেয়ে, 
কিন্তু ওই সাধারণত্বের আশায় প্রাণপাত করে এখনো শত সহস্র লালায়িত শ্রমজীবী। 
সাধারণত্বের মরীচিকায় আছন্ন, অসাধারণত্বের খোঁজ তার পরবর্তী লক্ষ্য। 
এই পথ দিয়েই হেঁটে গিয়েছেন কিন্তু আপনি অতীতে, 
পথ একই, তবু অনুসারীর প্রতি বিমূর্ত বিস্ময় আপনার কমে না 
হতাশা ঝাড়তে চান তার ওপরেই। 
ভুল কিছু হয়তো করেন না, স্বপ্নটাকে সমূলে উপড়ে ফেলতে চান কাণ্ডটা পচবে জেনেই 
কিন্তু গর্ভাশয়ের ক্ষমতা নেই শিশুকে গিলে খাওয়ার আর। 
ঝরা পাতা, শামুকের খোল, শালিকের বিষ্ঠা, সব কিছু বাধা সরিয়েছেন আপনি
 অনিন্দ্যসুন্দর চিতা সাজানো, কোন ঘাটের মরার না লোভ হয় তাতে চড়তে। 

Thursday, March 24, 2016

দোল

ফিরল আবার নিয়ম করেই বসন্ত আর রঙ-মিলন্তি
নিয়ম বাঁধা, তারই ফাঁকে কয়েক পশলা পাগলপন্তি।
অনভ্যাসের খেলার মাঝে ভিজল কিছু নতুন হৃদয়
দায়সারা হোক সময় স্রোতে, পুরনো যে ব্রাত্য তা নয়।।

পলাশ শাখা নুইয়ে আসে, খুঁজতে কিছু প্রেমের স্পর্শ
অল্প ক'দিন, এইটুকুনি সময় না হয় থাক সহর্ষ ।
ছড়িয়ে পড়ুক সুরের ছটা, দুন্দুভি আর ঢাকের বোলে
লজ্জাটুকু সরিয়ে সকল শ্যামের সাথে রাইও দোলে।

কিন্তু ফিকে নিয়ম মেনেই, এ বিদ্রোহে নাই কো সন্ধি
বসন্ত যে কালের কাছে এই জীবনের তরেই বন্দী।
তাই তো কারাগারেই যা হোক সাজিয়ে নেওয়া রঙ্গমঞ্চ
কর্তৃপক্ষ নারাজ তাতেও? তাহলে আজ  থাক বরঞ্চ।  

Sunday, March 13, 2016

নির্গমন

কলমের উত্তর করে যারা রক্তের স্রোতে
সেই দলে সত্যি বলি আপাতত 'তোমাকেই চাই'
একদা প্রথম সারি, ক্রমশ গিয়েছি শেষ রো'তে
টুক করে সরে পড়ি তা থেকেও, নিঃশব্দে সবাই,

যেমন খেলেছ তুমি, নিঃসাড়ে, দেওয়াল প্রমাণ
আবেগের সুড়সুড়ি, জনগণ স্মৃতিভ্রষ্ট তাই!
তবু যেন তুমি নয়, আফসোস, বড় ম্রিয়মাণ
অবশেষে সোজা ব্যাটে,  মান্যতা পেয়েছে জবাই।

পাক তাতে ক্ষতি নেই, সে পাওয়ার মূল্য অকিঞ্চিৎ
কেবল পক্ষ চেনা, তাও জানা তোমারই দয়ায়
বহুদিন আগে থেকে, তাও যার বিস্মৃত অতীত
তারও আজ তোমা নিয়ে সামান্যই ভাবনা আসে যায়।



    

Friday, March 11, 2016

হত্যার আহ্বান

আপনি যদি কখনো আমার কল্লা ফেলতে আসেন
আমি নতমস্তক হয়ে যাব, 
পূর্ণিমার রাত দেখে আসবেন 
যেইদিন আকাশের তারা দেখা যাবে। 
মেঘের চিহ্নমাত্র থাকবে না। 
শেষযাত্রায় তারাদের মূর্ছনা প্রত্যক্ষ করতে পারব না এমন দুর্ভাগ্য যেন না হয়।

বাদ এষা আসবেন, 
আপনার মন যখন থাকবে তুরীয় মেজাজে। 
কিন্তু শক্তহাতে ধরবেন চাপাতিখানা।
ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটুক, 
শুদ্ধ হয়ে যাক ধরণীসেই রক্তের স্রোতে উর্বর হোক বিরুদ্ধতার মাটি। 
সেই ক্ষেতে চারা রোপণের কৃতিত্ব আপনাকেও যে দিয়ে যেতে চাই কিছুটা অন্তত।

শান দিয়ে আসবেন অস্ত্রখানা,
মৃত্যু যন্ত্রণা চাই না বেশিক্ষণ। 
জানি কয়েক পলক সহ্য করতেই হবে
কিন্তু আত্মনিয়ন্ত্রণ হারাবেন না, 
মাদকতায় ভেসে যাবেন না অন্তত একদিন।
যদি সেই ভয়াল মুহূর্তে পাল্টা প্রত্যাঘাত করে ফেলি তাহলে যে মরেও শান্তি পাবো না।
শুধু একটাই অনুরধ, শেষ ইচ্ছা হিসাবে তার আগে আপনাকে একটা চুমু খাবো।

Saturday, March 5, 2016

খেলা

খেলা হবে মাঠজুড়ে রেষারেষি শকুনে শকুনে,  
গাণ্ডিব ছিলাটান, সাথে হাত অক্ষয় তুনে;  
যদিও নতুন নয়, দুইদলই প্রতিপক্ষ চেনে,  
লড়াই ও হয়তো বা সংগুপ্ত চিত্রনাট্য মেনে। 

কর্তার ইচ্ছায় কাজ, কখনো বা কর্মবিরতি,  
অনুগত শ্রমিকের জন্য কিছু খুচরো প্রতিশ্রুতি।  
সুদৃঢ় রাশ আজও চালকের কঠিন করায়,  
অন্যথা হলে যদি বিদ্রোহের আঁচ দেখা যায়!  

তবুও আফিমখেকো জনগণ সেই নিরুপায়,  
প্রতিবাদ করবার পায়নি সে আজও অভিপ্রায়।  
বিশৃঙ্খল, সবিরাম জোনাকির ইতিউতি আলো, 
তাই দিয়ে কে বা বার, বিপ্লবের আগুন জ্বালালো? 

Sunday, February 28, 2016

অছিলার খোঁজ

মনে রেখো প্রমূর্ত বেদনা
সমস্ত দিনের শেষে অপাপবিদ্ধ ওই পেলবের ঠোঁটে
কারো স্পর্শ স্থায়ী থাকবে না।
জানি আমি রক্তজবা ফুটিয়েছে তোমার ললাট
জানি আমি কৃষ্ণচূড়া জড়ো করে রাঙা দুই হাত 
তবু ইতি,
যদিও এ বসন্তের অভ্র মেখে নির্বিকল্প সমাধি পাবে না।



অপারগ অসম প্রেয়সী
অপেক্ষায় উপেক্ষায় বুঝি লাগল কলঙ্কের ছটা, চাঁদে
শুষ্ক হল হর্ষোজ্জ্বল হাসি।
জানি তুমি চেয়েছিলে অবিরত জোয়ারের স্রোত
জানি তুমি চেয়েছিলে অমারাতে ঝলসানো রোদ
স্বাভাবিক,
তবু কোন অছিলায় বলবনা কাকে ভালোবাসি।

যদিও বা নিষ্ফল বাসনা,
বাস্তবতা করোটির মোহ আবরণ নিল ছিঁড়ে, তবু
শৃঙ্গারের ত্রুটি রাখবে না
জানি আজ অতিক্রান্ত গোধূলিবেলার আহ্বান
জানি আজ সুসজ্জিত বাগিচা সে হয়েছে শ্মশান
জানি ইতি,
তবু আগামীর তরে নিম্নগামী হতে হলে বৃথা ডরাবে না।

Saturday, February 27, 2016

সিদ্ধান্ত

সাধ করে সোনার কলমে ভরেছি সুবর্ণরেখা কালি
মুক্তার অংশমিশ্রিত, তা দিয়ে চলবে না জোড়াতালি
তাই বুঝি থমকে বসে থাকা, যদিও আন্তরিক প্রয়াস
আপ্রাণ প্রচেষ্টা সংহতির, আপনাকে ব্যর্থ আশ্বাস।

তুমি বল এভাবেই হবে, সে মতে নিঃসঙ্গ তুমি নও
তবু সে বাক্যের তোড়ে আমি চেয়েছি ধরণী দ্বিধা হও
উপেক্ষা যে অসম্ভব লাগে, সিঁদুরে মেঘের সঙ্কেত
অভিজ্ঞতা এ কথাই বলে, জানি তবু থাকবে মতভেদ।

অনাদি অনন্তকাল ধরে, এমনই ভাবের আনাগোনা
তবে কোন সমষ্টিবাচক সিদ্ধান্তে আসতে চাইছি না।
সত্য যে প্রতিষ্ঠিত আছে, যদিও নিতান্ত ব্যক্তিগত
যদি তাতে সম্মতি থাকে তাহলে তুমিও সুস্বাগত।


Sunday, February 21, 2016

আহা আজি এ বসন্তে

আজকে আবার অমর একুশে, ভাষা দিবস, আন্তর্জাতিক!
আন্তর্জালিক বাঙ্গালী, তাই উপেক্ষা দুষ্কর।
কোন একদিন হয়তো আমিও সকালে উঠে স্ট্যাটাস দেব গর্বিত বাঙ্গালী বলে,
যেইদিন গর্বটা টিকে থাকবে ওই স্ট্যাটাসের মধ্যেই শুধু;
ততদিন পর্যন্ত ঢেঁকি গিলেই চলা,
সমগ্র ইতিহাস বুঝি নিমেষে চোখের সামনেতে, ক্যাপসুলে বন্দী হল বিশ্ববাসী দেখতে দেখতে।
আধুনিক প্যাকেজিং এ মুড়ে গেল, কতক অধ্যায়
তিলে তিলে গড়ে তোলা, কত প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির মিশেল;
অত কিছু জানাবার সময় বা পরিস্থিতি রয়েছে কি আজ?
অস্তিত্ব যে আজও বেঁচে সেইটুকু মহানুভবতা স্বীকার করেই শান্তি।
আমরা যে বিশ্বমানব, এর বেশী চাইতে লজ্জা করে-
বাজার নির্দিষ্ট করে দিয়ে গেছে নিজেদের মত, যে চুক্তিতে বিপ্লবী স্বভাবত সহজে সম্মত।
অনেক ঝরেছে রক্ত, ঝরিয়েছি,
সেই রক্ত মেখে জন্মও নিয়েছি আবার অজস্রবার।
তবু যেন প্রত্যয় ক্রমশ ম্রিয়মাণ,
অবশ্যম্ভাবী পরাজয় বাস্তব বলে খোঁজ করি না কোন মৃতসঞ্জীবনী সুরার,
সহস্র বছর ধরে সঞ্চিত কত সে ভাণ্ডার;
তাই বুঝি ছিটেফোঁটা করুণার বশে এক দিন, তা নিয়েই পরিতৃপ্তি, সহর্ষ, আনন্দে রঙিন।

Friday, February 19, 2016

কবি হয়ে ওঠার প্রয়াস

ছন্দ মিলছে তবুও যেন কবিতা হয়ে উঠছে না 
সুদূরপারি তবুও গাড়ি টগবগিয়ে ছুটছে না 
তেপান্তরের মাঠ পেরোলাম তবুও ডাকাত লুটছে না
জ্ঞানের বহর বাড়ছে তবু কলমে বোল ফুটছে না। 

চরমপত্র মাথার উপর তবুও তো ঝাঁপাচ্ছি না 
ভরা গাঙে বান এসেছে তবুও জল মাপাচ্ছি না
ভবিষ্যৎটা আঁধার তবু এখনো ভয় পাচ্ছি না
দ্বন্দ্বগুলো জমছে তবু এখনো হাল ছাড়ছি না।    

লাল ইশক

ভালোবাসা প্রেম নাকি শুধু শরীরের ডাক
স্বর্গীয় সুখ নাকি ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক
দ্বন্দ্বের অবসান হবে না, ধোঁয়াশা ছাই
তবু আজ বিপ্লবে অংশীদার হওয়া চাই!
অচেনা লোহিতকণা, সে আমার প্রসাধন,
বিপ্লব আঁকি তাকে সাথে করে মূলধন,
সে ছবির প্রেরণায় আমি সংগ্রামী বীর!
বন্দুক বুলেট সবই বয়ে চলে এ শরীর।
আঘাত হানব, তাকে যে নামেই ডাকা হোক,
জানি সে শুধুই প্রেম, যাই বলে ভদ্রলোক।
শুদ্ধতার বুলি ছুঁড়ে, যেভাবেই দেগে দিক,
সে ছিল বিপ্লব, নয় তো তারই আনুষঙ্গিক!

Saturday, February 13, 2016

দুঃস্বপ্ন

কোন স্বপ্ন নয়,  
স্বপ্ন খোঁজে বাঁধাধরা নিয়ন্ত্রিত পথ,  
নতুন চাইতে আর
পুরাতন অভিসার 
কেন ফের সওয়ারি সে গতিহীন রথ 
যার গন্তব্য শুধু ভগ্ন ইমারত। 

তবু নিতান্তই 
মধ্যমেধা চাষে আমি আহরিত জীব।  
ক্ষুদ্র গণ্ডীর মাঝে 
বদ্ধ হতেই সাজে,  
অতিক্রম স্বপ্ন ফের, কাজেই নির্জীব;  
সংকুচিত থাকা তাই আমার নসীব। 

অন্য কিছু চাই 
হদিশ অজানা যার, তাই লোভনীয় 
তারুণ্য, মোহময়? 
অনুভূতি নির্দয়? 
সেসবও অর্থহীন, নয় তো অমিয় 
কাঙ্ক্ষিত বরং হোক প্রেম অপ্রমেয়।  

তাও ছেঁদো লাগে 
কত ভেবে কিছু লিখি, তাও তো বিস্বাদ 
ভাবনা কাগজে যায় 
সাথে বুঝি কী হারায় 
গতানুগতিক ঢঙে নতুনত্ব বাদ 
ফের পারি সেথা, যার ভিত্তি অবসাদ । 

Saturday, February 6, 2016

অভ্যাস

প্রতি বছর কিছু কচি কচি ছেলেমেয়ে নতুন নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে
আমিও এককালে স্বপ্ন দেখতাম, কচি ছিলাম কি ছিলাম না তা এখন অবান্তর,
যদিও স্বাভাবিক নিয়মকে অগ্রাহ্য করতে পারিনি  -- দূর্বার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও,
স্রোতের সাথে ভেসে গিয়েছি স্বস্তিতে থাকব বলেই
কি অস্বস্তি তবু বয়ে নিয়ে চলা নেহাত অভ্যাসবশত
ছাড়ব ছাড়ব ছাড়ব, খেদোক্তি করেই চলি কেবল নিজের কাছে একান্তে
এমন কিছু কথা যা লোকচক্ষুর অন্তরালেই কেবল বলা চলে
কারণ অন্য কাউকে বিশ্বাস করার মত মহত্ব আর অবশিষ্ট নেই আমার মধ্যে।


তবুও ফের কচি কচি ছেলেমেয়ে মোহমুগ্ধ হয় কীসের নেশায়, জানি অথচ অজানা
বারবার ইচ্ছা করে তছনছ করে দিই এই কৃত্রিম মুখোশ
চেঁচিয়ে বলে উঠি আমি কিছুই বিশ্বাস করি না, আমায় বিশ্বাস করো না
কিন্তু অভ্যাস, বেঁচে থাকার পক্ষে জরুরী হয়ে গিয়েছে এই যৌবনযাপন
কারণ সে যৌবন আর অবশিষ্ট নেই যার বলে নতুন করে পথ চলার স্বপ্ন দেখতে পারি
তাই তোমাদের ব্যবহার করব, তোমার উদ্দামতা তোমার স্বপ্ন তোমাদের উচ্ছ্বাস
এই রসদটুকুই আমার চাই, বিনিময়ে তোমাদের কিছু দেব না,
তোমরা চাও না সেটাও আমার অজানা নয়, আমিও তো চাইতাম না একদিন।

আজও চাই না, তাও তোমাদের সাহায্যে বেঁচে আছি অন্যভাবে বাঁচতে আলস্য বলে
তোমরাও আমায় শেষ করে দিচ্ছ নিজেদের অজান্তেই
দুই পক্ষের সর্বনেশে খেলা, একপক্ষ জানে অন্য পক্ষ তাও না
তবু খেলতে খেলতে যদি সময় কেটে যায় অন্য কথা ভাবব কেন আর
এই দৈনন্দিন কচকচির বাইরে বেঁচে থাকা, আসলে সেটাও কচকচি তবু মুফতের কিছু ভালোবাসা
কারণ তোমরা জানো না আমার স্বরূপ
জানবে একদিন, তবে প্রবাহের পথে তোমরা তখন অনেকদূরে নতুনদের জায়গা করে দিয়ে
লকগেটে আটকা পরে আছি আমি কেবল, তবে তোমরা সেটা কখনো জানতে পারবে না। 

Friday, January 29, 2016

সেই দিন

আসবে সেসব দিন, শীঘ্রই, প্রতীক্ষা তাদেরই
কৃত্রিম আবরণ খসে যেতে হয় না বেশী দেরী
এ মোহ সমূলে যবে উৎসাদিত হবে সে সময়
ক্ষোভ মনে পুঞ্জিভূত করো না যা যথোচিত নয়।
যখন দেওয়ার শেষ, কামনা যা কুণ্ডলীভূত
যেটুকু চয়িত ছিল তাও সময়ের স্রোতে স্রুত
যখন ধূসর কাল শুষে নেবে সম্পূর্ণ আমায়
তখন গল্পের শেষে আর কি চাইবে বিছানায়?
হাসি নয় রঙ্গ নয় শুধু রিক্ততার অঞ্জলি
প্রেমালাপ পরাহত শুধু বাস্তবের কথাকলি,
আধিক্লিষ্ট বর্ণহীন ভবিষ্যৎ সে গল্পই বলে
তাতেই আশ্বস্ত হলে এরপরও কথা কওয়া চলে।

Thursday, January 28, 2016

অজানা কিছু দিনের কথা

আমাদের জীবনে অনেক মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে, তার মধ্যে হাতে গোনা কিছু মানুষ প্রভাব বিস্তার করে আপাতভাবে আমাদের উপর। এছাড়াও কিন্তু প্রতিনিয়তই অজস্র মানুষের সাহচর্য পাই যা আমাদের অন্তরে রয়ে যায় নগণ্য ভূমিকার অধিকারী হিসাবে। এর মধ্যে থাকে হয়তো আমাদের নিকটাত্মীয় অনেক মানুষ, যারা চাইলেও আমাদের পরমাত্মীয় হয়ে উঠতে পারেননি কিছুটা আমাদেরই গাফিলতিতে। কিছু তাদের প্রভাব আমরা আমাদের জীবনে যতই অস্বীকার করতে যাই, হাসেন অন্তর্যামী। কিছু প্রভাব সুস্পষ্ট, কারণ তাতে মিশে আছে বলপ্রয়োগ, কিছু প্রভাব সূক্ষ্ম, কিন্তু তা অযত্নশীল এবং তাই আমাদের উপেক্ষার পাত্র হয়েই রয়ে যায় চিরদিন, যদিও আমাদের মননে তারই সংখ্যাধিক্য। তেমনই কিছু মানুষের গল্প মাঝেমাঝে আমাদের চোখের সামনে আচম্বিতেই ঝলক লাগিয়ে আমাদের অবাক করে দেয়, যদিও আপাতদৃষ্টিতে তা তেমন কিছু আশ্চর্যজনক নয়। হয়তো সেই কারণেই বিস্মিত হই এতো বেশী।

অনুভূতি, জীবনদর্শন, ইতিহাস, সব অস্তাচলে নিমগ্ন হয়ে যায় প্রতিনিয়ত, আমাদের চোখের সামনেই অথচ অগোচরে। বিবিধের মাঝে মহানের খোঁজ করা ছেড়ে এসেছি কতকাল পূর্বেই। অথচ এই সামান্য কিছু অসামান্য কাহিনী আমাদের বলে দেয় কত ভালোবাসার, কত সাম্যের কথা, কত পূর্ণতার কথা। অতীতের এই উপাখ্যান কে অস্বীকার করে নেয়, তার প্রতি কিছু সহানুভূতি নিয়ে যদি আমরা একটু পথচলার চেষ্টা করতাম, তাহলে হয়তো জীবনের অনেক দুঃসহ গাঁথার সমাধান অনেক সহজেই প্রাপ্ত হতাম।

তেমনই গল্পের রসদ পাই আমাদের ঠাকুমা দিদিমাদের থেকে, যাদের দেখে আসছি ছোট থেকেই এবং দূরে ঠেলে আসছি সময়ের সাথে সাথে আরও দূর্বার গতিতে। তেমনই এক ঠাকুমার কথা বলার জন্য এত ভণিতা, যিনি জন্মেছিলেন এক রাজপরিবারে। অস্থির সময়, ধর্মের রাজনীতি তার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল তার ধনসম্পদের সাথে সাথে তার পরিচয়টাও, তার শৈশব কৈশোর সবকিছুই চিহ্নিত হয়েছে অলীক কুনাট্য হিসাবে, এমনকি তার কাছের মানুষের থেকেও। একা হয়ে গিয়েছেন ক্রমশ নিজের দুনিয়ায়, তবু সযত্নে লালন করেছেন সেই স্মৃতিকেই। দুঃস্বপ্নের যন্ত্রণা বলে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়তো সহজ কাজ, অন্তত সময়ের স্রোতে ভেসে চলার জন্য তাই আমাদের বর্তমান রীতি, তবু বিশ্বাসের উপর ভর করে বেঁচে চলার প্রত্যয় সার্বজনীন না হলেও সম্পূর্ণ অবলুপ্ত নয়।

রাজপরিবার সম্পর্কে আধুনিককালে অনেকের মনেই একটি সন্দেহ এবং ঘৃণার ভাব প্রকট হয়, ঐশ্বর্যের সাথে সাথে এই বাস্তবের সাথেও তাদের হয়তো বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে। অত্যাচারী যে তারা একেবারেই নন এমন দাবী করাও হয়তো চলে না, অথবা অর্থের অপচয় যে তারা করেননি এমনও হলফ করে বলা চলে না। তবু নিজেদের মত করে উন্নয়নের চেষ্টাও যে তারা করেননি এমনও নয়। হাতিশালে হাতি ঘোড়াশালে ঘোড়ার সাথে সাথে শিক্ষাঙ্গনের উন্নতির প্রতিও তারা কিঞ্চিৎ মনোযোগ অবশ্যই দিয়েছেন, এমন সেখানে রাজপরিবারের সন্তানদের পাশাপাশি প্রজাদের বঞ্চিত করে রাখার প্রচেষ্টা বিদ্যমান ছিল না। আর দশটা সাধারণ বাঙ্গালী পরিবারের তুলনায় জীবনধারণে বাত্যয় ছিল না, হাসিকান্না ভালোবাসা রাজকীয়তার সাথে লোপ পায় এমন ধারণা আমরা যদি করে থাকি তাহলে তা বাস্তবের সাথে তেমন সাযুজ্য রাখে না। নারী হিসাবে প্রাচুর্যের মধ্যেও অবশ্য অপ্রাপ্তির অন্ত নেই সেই যুগের সাথে তাল মিলিয়েই, খাওয়া দাওয়া শিক্ষা ইত্যাদির ক্ষেত্রে, আবার সেই সাথে খুনসুটির গল্পও। তবে বুর্জোয়াদের আয়েশি গল্পের সাথে তা মেলে না, বরং  স্বয়ংসম্পূর্ণতার ধারণা এমন সুস্পষ্ট করে কম মানুষের মধ্যেই দেখেছি, পারিবারিক নানা অশান্তির কারণেও যা ত্যাগ করেননি তিনি আদর্শ হিসাবে। বর্তমানের কাঁচ চোখ থেমে নামিয়ে ফেললে যেন চলে আসে আশ্চর্যজনকভাবে অনেক বেশী স্বচ্ছতা। 'দূর'দৃষ্টিসম্পন্ন যে আমরা এখনো হয়ে উঠিনি এতোটুকু তা আবার অনুভব করতে হয়, সে যতই তা নিয়ে গর্ববোধ করি না কেন। বর্তমানে কেবল অতীতকে অযৌক্তিক ঘৃণা করাই নয়, বরং  তার থেকেও বেশী আমরা নিজেরাই পিছিয়ে গিয়েছি অনেক দিক থেকে সেই অতীতের চেয়েও। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয়ের এই হালের শাইন করার বিষয়ে খেদোক্তি দেখে যতই আমরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করি না কেন, তার প্রতি মুখ ফিরিয়ে থাকা বোধকরি সম্ভব নয়। 

Tuesday, January 26, 2016

দেশের কথা

বাৎসরিক পতাকার উত্তোলন হল ধীরে ধীরে 
সাড়ম্বর আয়োজন, রাষ্ট্র করে প্রভাব বিস্তার 
সাজো সাজো রব শেষে ফিরে যাওয়া পুরনো তিমিরে 
মাঝে স্বাদবদলের জন্য কিছু ষোড়শোপাচার।   

এভাবে থাকব ভুলে, যোগ দেব আত্মপরিচয়ে
শিল্পনৈপুণ্যেতে গড়া ক্রমান্বয়ে কৃত্রিম সাজ
ক্রমশ আত্মস্থ করা প্রতিটি প্রতীক, ধীর লয়ে, 
ক্রমশ মানিয়ে নেওয়া বিরচিত পরিচয় আজ।     

ভাঙতে চাই আখ্যায়িকা, আমার কথাকে স্থান দিতে।  
অসম লড়াই, লড়ি, প্রতিক্ষণে অবস্থ হারাই;   
তবুও কর্ষণ চলে প্রস্তরীভূত সে জমিতে,  
নিজেকে যতই ভুলি তবুও তো প্রতিবাদ চাই। 

Thursday, January 21, 2016

তি-রোহিত

আজও দেখি মৃত্যু নিয়ে আসে কত নব বিনির্মাণ, দাঁড়িপাল্লা বাটখারা, কিলোদরে কেনা বেচা প্রাণ সর্বত্র সে গড়ে চলা আধুনিক নন্দিত শ্মশান ।
কাটাছেঁড়া শেষ হল, কোন এক দিকে পাল্লা ভারি যদিও তা অনিবার্য, খরস্রোতে কে বা দেবে পাড়ি অতএব সেজে ওঠে হুডখোলা শববাহী গাড়ি ।
অন্ধকার দিন শেষে বুঝি এলো এক কণা আলো, পেয়েছে শরীর এক, ব্যবচ্ছেদ করা যাবে ভালো জীবনে সে যাই পাক মরণটা হোক জমকালো।
আগুন নিয়েছ হাতে, খেলা যাবে, যথেচ্ছ মন্ত্রণা ঘৃতাহুতি, নইলে যে খাণ্ডব দহন হবে না!! জ্বলবে তুমিও, জানি সেই ভয়ে তবু পিছাবে না!
এভাবেই জয় ভাবো সমাজকে ক্ষুদ্র অংশে ভেঙে পাক্ষিক মানবতা, উত্তর-আধুনিক রঙে রেঙে ধ্বস্ত তোমারই হাতে ফিরছ যে সহিষ্ণুতা মেগে।
নিয়মও আছে সে গড়া, যার ফাঁদে রিক্ত কণ্ঠস্বর আত্মগ্রাহী, তাই বুঝি চিরায়ত নব-কলেবর। বিপ্লব? সে পথেও একা হাঁটা বড়ই দুষ্কর!

Saturday, January 16, 2016

লিখি

লিখছি অনেকদিন, একেক সময় বেগ আসে আবার ঝিমিয়ে পড়ি।
 হয়তো পরিবর্তন এসেছে শব্দাবলীতে, চিন্তাগুলিতে, জ্ঞানের থলীতে;
হয়তো আসেনি --
বিচারকের আসনে কেবল আমিই,
আমির কাছে আমি থেকে গিয়েছি সেই এক বিন্দুতে; পরিবর্তন আসুক বা না আসুক।

পরিচিত সত্ত্বাকে চেনা স্বস্তিদায়ক,
আরামদায়ক, অক্লান্তিকর,
নিরর্থক অতীতের ঝাঁপিতে হাত ঢোকানো আর হয়ে ওঠে না তাই।
কোন গুপ্ত কালসাপ হয়তো ফণা তুলে অপেক্ষারত সেই গোপন কুলুঙ্গিতে।
তার বিষের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে এক আমির কাছে,
যার কাছে ফিরে যেতে পারি কেবল একটাই শর্তে।
সেই শর্ত কিছুই না, কেবল স্বাভাবিকতা।

কোন নৌকা চরব না, কোন মেট্রো ধরব না, কারো ধাক্কায় নড়ব না।
 তাও যদি পৌঁছে যাই অচিনপুরে তবে
 খুশিমনেই মেনে নেব আমার প্রারব্ধকে।
পরিত্রাণ সাধ্যের অতীত, এক সে হতে পারে আত্মহননের মাধ্যমে।
তবে সেই পরিশ্রমটুকু যদি মেনে নিই তবে তো আরো কত কিছু,
কত ফেলে আসা বাঁক, কত ঝুরঝুরে টিলা, কত ভাবনার অছিলা--
 ঘুরে দেখে আসবো নাকি আরেকবার?
প্রতিটা পদক্ষেপ, ফেলে দেখব নাকি অন্য ভাবে?
কবে এসে ফিরতে পারবো এই বন্দরে?
হয়তো অনেক সোজাপথে চলে এলাম আবার জীবনের এই দোরগোড়ায়।
আশ্চর্য তো কম হলাম না এই জীবনে,
আশ্চর্য হই-- অভ্যস্ত হই,
তবু পুনরায় আশ্চর্য হই বৈচিত্র্যের কাছে।
পরাবর্তন হয় না, সেই বৈচিত্র্যেরই কাছে।  

Thursday, January 7, 2016

আত্মসংবরণ

অনুভূতি আসছে থরে থরে, আছড়ে পড়ে ঢেউয়ের প্রমাণ  
কিন্তু আমি তীরবর্তী নই ভিজব না সে সিদ্ধান্ত নেওয়া  
ঝাপটাগুলো সয়েছি অনেক, অত্যাধিকই, ভীষ্মের সমান 
শরশয্যা, যন্ত্রণার ভিড়ে, ছুঁতে কিছু ছিল যা আলেয়া।  

শ্রমজীবী যেন প্রাত্যহিক দিনগত কর্মযজ্ঞে নামে,   
সঙ্কলিত হতে থাকে কোথা রাসায়নিক বিরক্তি বিক্রিয়া,
অপেক্ষায় তারপর থাকা, বিস্ফোরণ সেই শান্তিধামে।
জানি আমি বুর্জোয়ার দলে, তবু বুঝি জমে প্রতিক্রিয়া ।।

আত্মসংবরণে তাও চলি, কেউ বুঝি প্রক্রিয়া থামায়।
বিপ্লবেতে অধিকার আমারও, যদিও তা মানবিক রূপে 
হয়তো তাই বাধ সাধে কিছু, নিষ্ঠুর প্রকাশ ভঙ্গিমায়
সংগ্রামের ইচ্ছা যাই হোক, সরে গেছি নিজেই নিশ্চুপে । 

Saturday, January 2, 2016

পুনরায়

এতদিন ধরে লালিত করেছি স্নেহভরা অভিমানে, কখনো হয়েছে বোঝা কখনো বা নিষ্ঠুর পরিহাস, টুঁটি চেপে ধরে কখনো, কখনো মুক্তির অভিলাষ, তবুও এখনো অস্ত্র আমার অবলা পরিত্রাণে। ঘৃণা ভরে তবু চাইতে পারি না বিচ্ছেদ বিষবৎ, স্মৃতির পাতায় যা ছিল আজকে তাতেই বুলাই হাত, ক্ষণে ক্ষণে তবু জমা হয় কিছু দ্বন্দ্ব অকস্মাৎ, খেয়ালী বিধির বিচরণই দেখে কাটাব ভবিষ্যৎ।
এই ছিল বুঝি এই গেল চলে জোনাকির মত জ্বলে, অনিশ্চিতের আহ্বান, তবু তার মাঝে খুঁজি দিশা, এরই মত কিছু প্রশ্ন যাদের লক্ষ্য নয় জিগীষা, তারাই তোমার ডাক বয়ে আনে অপলক হিল্লোলে। 


আহ্বান শুনি, ক্ষণেকে ভুলাই, প্রতিরোধ ছারখার, যদিও আবার এই পথে যাব পুনরায় তাও জানো, অচেনা তবুও চেনা পথ, স্মৃতি স্বচ্ছতায় নিকানো,
তাই বুঝি পাই আকর্ষণের নিশিডাক প্রতিবার।