Saturday, January 31, 2015

প্রশ্নচিহ্ন

মাঝে মাঝে এমন প্রশ্নের মুখে ফেলে দাও সমাজ
যেন নিজের ওপর বিশ্বাসটাই হারিয়ে ফেলি
বা ফেলতে ফেলতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি
সত্যি কি এত নিষ্ঠুর
সত্যি কি এত আদেখলা
সত্যি কি সমাজের অংশ হয়ে থাকতে পারি না
সত্যি কি অনুভূতির শিকড়টাই পৌঁছায়নি অন্তঃস্থলে ।

বলেছি  তো অনেক কথা হাসি মজার মধ্যে খানেক
সেইসব নিছক মজা, বাচালতা- সত্যি ভেবে নিলে
আমিও করেছি দোষ থটরিডিং টা হয়নি আজও শেখা
এখন বলব কি করে
এখন ক্ষমা চাইবো কি ভাবে
এখন উপায় নেই কোন
এখন সময় নয় নিজের বক্তব্য বোঝাবার যদিও বা থাক প্রয়োজন ।

তবু যেটুকু করা সম্ভব করেছি উত্তর পাওয়ার জন্য নয়
অবশ্য সত্যি বলি, অপেক্ষা করেছি প্রত্যুত্তরের
হয়তো বা বোঝাতে নিজের অবস্থান ভুল বোঝাবুঝি মেটাতে
ক্ষমা চেয়েছি সেই সুযোগের জন্য
ক্ষমা চেয়েছি ক্ষতে প্রলপ দিতে
ক্ষমা পাইনি যেটুকু বুঝেছি
ক্ষমা করলাম তবু আমায় নিজেকে বোঝানোর ত্রুটি রাখিনি বলে ।






Tuesday, January 27, 2015

প্রগতিশীল এক্সপোজড

পাগলামির লিস্টি থেকে বেছেবুছে এক-একটা আইটেম 
সন্না দিয়ে সবগুলো সের দরে উপরে ফেলবই 
সুযোগের অবকাশে বিধ্বংসী সঙ্গীত গাইতেম
প্রভাত-ফেরির ছলে ছড়াতেম লক্ষ উড়ো খই ।  

ধাক্কা দিয়ে ক্রমাগত ভেঙ্গে দেব ভণ্ড ইমারৎ 
উন্নত সমাজের আজ চাই নাকো এন্ট্রান্স পাস 
ক্লান্ত লাগে শুনতে সেই বস্তাপচা মেকি সহবৎ 
তাই আজ ঢিল ছুঁড়ি যেইখানে তোমাদের বাস । 

সেখানে তো বধ্যভূমি প্রগতিশীলের দলবল 
মুখোশটা ছুঁড়ে ফেলে নেমে গেছে অসম যুদ্ধেতে 
এটাই তো যুদ্ধজয় লম্পট ভাগাড়ের বল? 
তফাৎটা ঘুচে গেল সমগ্র দুনিয়ার চোখেতে । 

Sunday, January 25, 2015

কথায় কাব্যে

কথ্য ভাষা বা কাব্যের ভাষা
যে ভাষাতেই বলি হয়তো বা মনের গোপন কিছু অভিব্যাক্তি
জানিনা ঠিক বলতে সক্ষম হব কিনা
কাব্যের ভাষা বড়ই মিথ্যা ঘেঁষা
কায়দা করে কোন শব্দের সাথে কি মিলিয়ে দেব
আর তুমি বসে থাকবে বোকা বোনে
তাই সে আমার সবচেয়ে প্রিয় , পালিয়ে যাওয়ার সহজ পন্থা ।

ধরা দেব না ভেবেই নিয়েছি
তাই তো দেখি অভিব্যাক্তি বেরোচ্ছে না সহজ হয়ে
বেরোচ্ছে না একটুকুও তোমার কাছে
তাই বুঝি সেই কম্প্রোমাইজ করতে হলই
না করলেও সে চলতো তবু বাহাদুরির লোভ লেগেছে
সবই কেবল চটকদারির নতুন কোন
প্রতিশব্দ, রংবাহারি । নাম শুনে যার সিটকায় না নাক দুখানা ।

চ্যালেঞ্জ নিলাম মুখের বুলির ভুল্ভুলিয়ায়
তোমায় আমি সঙ্গে নিয়ে ঘুরব এমন
ভ্রমণ হবে সহজ ভাষায় সর্বনাশা
সর্বনাশটা কার সে কথা থাকুক তোলা ভবিষ্যতের জন্য এখন
এইবারেতে খেলার শুরু , অন ইয়োর মার্ক
জয়ের জন্য থোড়াই আমি কেয়ার করি
সেই কারণে মাঠের মাঝে আজকে আমি শেষ বাজিগর ।

সরস্বতী ও কষ্টসাধনা

'সরস্বতীর সেবা করি অন্ন যে তাই জুটল না
লক্ষ্মী গেল অন্য পথে দুঃখ যে তাই ঘুচল না'



বোধকরি সত্যি । যদি নাও হওয়ে থাকে তবু যে পরিস্থিতি এবং পরিবেশে বড় হওয়া তাতে মজ্জাগত হয়ে গেছে এই শিক্ষার সাথে অর্থের বিবাদ । এঁদের সহাবস্থান যেন কোন প্রকারেই সম্ভব নয় এরকম একটা চিন্তা মনের মধ্যে ভরে দেওয়া । শুধু শিক্ষাই নয় সঙ্গীতচর্চা ইত্যাদি আছে এই দলে । নিজেকে রিক্ত করে তবে শিক্ষা সঙ্গীত ইত্যাদির চর্চা করা । তার মধ্যে অর্থের অনধিকার চর্চা যেন পুরো সাধনাকে করে দেবে ধূলিসাৎ । কালিদাস, বিদ্যাসাগর ইত্যাদি  সরস্বতীর বরপুত্র হিসাবে প্রচারিত তাঁদের সবার জীবনের দারিদ্র্যের কথা যেন আমরা ইউলোজাইজ করি জাতিগত ভাবে । সাধনার অঙ্গ হিসেবে যেমন সন্ন্যাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, সংযম এবং কষ্টসাধনার কথা বারবার ঘুরে ফিরে আসে আমাদের বক্তব্য এবং লেখনীতে । এই বিষয়ে আমাদের প্রিয় উক্তি 'কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না ' , কিন্তু কি করলে মেলে সে প্রশ্ন এরথেকে সরাসরি পরিষ্কার নয় । আর কষ্টকে আক্ষরিক অর্থে নিয়েই মানুষ যুগ যুগ ধরে চলে আসছে । যার যত আত্মত্যাগ তার তত সিদ্ধিলাভ এই হল আমাদের মনস্তত্ব ।

মহাত্মা গান্ধীকে জাতীর জনক হিসাবে শ্রদ্ধা করে অনেকে । তবে ঘুরে ফিরে যেন আসে এমন একটা ধারণা 'কটিমাত্র বস্ত্রাবৃত হইয়া বল আমি ভারতবাসী' । ভাল কথা, কিন্তু তা বলে এমন যেন না হয় যে কটিমাত্র বস্ত্রাবৃত হতে অসম্মত হয়েও যে ভারতবাসী হিসেবে নিজেকে দাবী করে তার সে দাবীকে আমরা নস্যাৎ করে দিলাম । সরস্বতী প্রীতির মধ্যেও যেন ঢুকে পড়েছে সেইরকম একটা ভাব । অথচ আমাদের দেশের উন্নতিসাধনের জন্য যা দরকার তা হল এই অনন্ত কলহ দমন করে দুই সতীনের মধ্যে বোঝাপড়ার সম্পর্ক স্থাপন করা । পরম শ্রদ্ধেয় বঙ্কিমবাবু বলে গেছেন সে কথাই । যুগযুগ ধরে সরস্বতীর বরপুত্রেরা সহায়তা লাভ করেছেন লক্ষ্মীর কিন্তু এখন যেন আত্মগরিমা আমাদের এমনি প্রবল যে আমরা অস্পৃশ্যের ন্যায় জ্ঞান করি লক্ষ্মীকে । কিন্তু সমাজের স্বার্থে এবং সমাজের অন্তর্ভুক্ত জনমানুষের স্বার্থে সামঞ্জস্য বিধেয় এবং তার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া আশু প্রয়োজন । 

এলোমেলো কথা

অন্তহীন বিশ্লেষণ যার প্রাপ্তি হয়তো কেবলমাত্র অন্তঃসারশূন্য কিছু নিরর্থক বুলি । তাতে না এই পৃথিবীর কিছু যাবে আসবে না অপার্থিব কোন অনুভূতির প্রকাশ হবে । সেই বক্তব্য পেশ করার সময়ও কিনা খেয়াল রাখতে হয় বাক্যবিন্যাস  এবং শব্দসংখ্যার উপর, এমনি আমাদের বেখেয়ালি স্বত্বাসৃষ্টির ভণ্ডামি । তাই হয়তো এই বেদনাদায়ক ভাবনা ফিরে ফিরে আসে যা থেকে মুক্তিলাভ হয়তো কেবল এই ব্লগে তাকে হালকা করে যাওয়া । নিজের ওপর আস্থা হারালাম আবার, প্রায়শই হারাই কিন্তু আশ্চর্য হই এই ভেবে যে কখন অতর্কিতে সে আবার ফিরে ঘাপটি মেরে বসে আছে আমার অন্তরের অন্তঃস্থলে । সামান্যটুকু জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি, হয়তো এই ভেবে যে মহানন্দে আমি জীবন-সমুদ্রে এমন সবেগে ঝাঁপিয়ে পড়ি যে তার এযাত্রা আমার সাথে কালযাপন নিমেষে না ফুরিয়ে যায় ।
তবু শেষ আছে, তাই শূন্য সেজে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কোন আকুতি অনুভব করিনা । এই ক্লেদাক্ত শরীর কে সাথী করে তবু পথচলা সেই চিরন্তন পথে সেই চেনা ভঙ্গীতে কারণ অজ্ঞাতকে সহজভাবে আপন করে নেওয়ার ক্ষমতা আজ হারিয়ে ফেলেছি । আজকাল কোন কিছু লিখতে গেলে কেমন যেন থেমে যেতে ইচ্ছা হয়, দেখার জন্য যে লেখার পেছনের ভাবনার আয়ু কত । প্রশ্নগুলো সহজ কিন্তু সব প্রশ্নের উত্তর সুমনের গানের মত সহজে জানা যায় না । এই হয়তো ভাবি এক, আবার এই দেখি আলাদা । আসলে আদৌ কোন ভাবনা ছিল কি না সে চিন্তাও করতে হবে । তবে সবকিছুই অবকাশ অনুসারে । আর সে অবকাশ নিজেই বা নিজেকে দিচ্ছে কয়জন । হয়তো কিছু মানুষ দিলে অন্যরাও, চক্ষুলজ্জার খাতিরেই হোক বা নব্যপন্থা অবলম্বন করার তাগিদে, দিত । কিন্তু জল বয় কেবল উঁচু থেকে নিচুতে কাজেই একবার নিজেকে সময় না দিলে সে সময় লক্ষবার খুঁজেও আর দিতে পারলাম না । 

Saturday, January 17, 2015

কৈফিয়ৎ

অশ্রুত প্রতিবন্ধে
অথবা অযথা দ্বন্দ্বে  
ভেবেছিলাম আজ বাঁধব তোমাকে মুক্তবন্ধ ছন্দে । 
যতটুকু পারি, জিতি কি বা হারি লড়ে যাব যে আনন্দে,  
শেষ ফলটুকু যে দিকেই যাক ভালোয় অথবা মন্দে।।   

বন্ধনহীন গ্রন্থী 
নিমেষে ঘটালো সন্ধি 
দ্রুততার সাথে এলোমেলো হাতে বাঁধন খোলায় মন দি, 
যদিও এ খেলা নবপরিসরে সৃষ্টির পরিপন্থী। 
জানি ছিল আজ মুক্তির দিশা, তবু শখে হই বন্দী।।   

বিকিয়ে যাওয়ার অর্থ 
বন্দিমুক্তি শর্ত
নিয়ন্ত্রণের পেয়ে যাবে ভাব নিমেষেই ছাড়পত্র ? 
সুদূরপ্রসারী ফেলেছ প্রভাব তবুও আমি অনড় তো 
ভবিষ্যতের জবাবদিহিই এখনো আমার বর্ত্ম । 

Monday, January 12, 2015

স্রোতস্বিনী

থেমে থাকি, তবু দেখি গতির বেগের স্রোতে ভেসে 
পৌছেছি সেখানেই, গন্তব্যের হারানো উদ্দেশে
এখনো আনন্দ খুঁজি হয়তো বা বাঁচার আশায় 
তাই বুঝি কেউ ঠিকই অতর্কিতে নিঃশব্দে ভাসায়।  

গোপনে রয়েছি দূর-গহনেতে তোর অপেক্ষায় 
সময়ের গতিবেগ ভুলে গেছি, কি বা আসে যায় 
অপেক্ষা তো ক্ষণস্থায়ী আজকের গতিশীল কালে  
যে যুগেতে প্রতিদিন ঘুম ভাঙে ধূসর সকালে।  

আগে তবু শান্তি ছিল, ছিল নিভৃতের ছায়ারাজি 
হারিয়েছে সবই আজ- ঝরা সময়ের কারসাজি 
যত খুঁটি ছিল গাঁথা দুর্নিবার স্রোতে গেছে ভেসে 
ফেলেছি নোঙর আজ যুগান্তরের পরিশেষে।