Wednesday, July 29, 2020

কলকাতার কবিতা

দারুণ দুর্দিন চলছে বহুদিন বাংলা কবিতার 
কানাগলি, ছেঁড়াতার- ঠিক যেন কলকাতা শহর
চাপা দুর্গন্ধগুলো মুক্তি পেল ডানা মেলবার
আছে আর কী বা পড়ে, চারদিকে শব্দের কবর। 

কিছুই দেবার নেই তোমার ওই প্রাচীন শ্মশানে 
গোঙানির মত তার কণ্ঠস্বর মৃদু থেকে ক্ষীণ 
ত্যাগ করে এসেছি সে কত যুগ কাছারি ফরমানে
এবার সুশীঘ্র হোক অবয়ব পঞ্চভুতে লীন। 

অতীতকে অতিক্রম কঠিন তা বুঝি বারে বারে, 
তাই একাকীত্বের সঙ্গী আজ, স্বেচ্ছায় তো নয়
এগোব তবুও পথে, তোমার সমাজের অগোচরে 
তোমাদের অভ্যাস আমার অনর্থক অপচয়। 

ফিরে দেখা

একদিন, বহুদিন কেটে গেলে ফিরে আসে ফের,
একই তবু বৈপরীত্য সাথে আনে মধুর অতীতের, 
কিছু স্মৃতি, অমলিন, ডেকে চলে বারে বারে মোরে; 
সরণীর সরু গলি বেয়ে চলা চিরায়ত ভোরে।  

একই, তবু এক নয়, প্রতিবার থাকে কিছু স্বাদ 
অচেনা, যা গড়ে চলে অনায়াসে স্বপ্নের প্রাসাদ। 
প্রতিবার বাস্তব মনে হয়, তুচ্ছ অভিজ্ঞতা! 
এই বুঝি যৌবনে নিয়ে আসে কৈশোর বারতা। 

এভাবেই শৈশব টিকে থাকে আমার অন্তরে,  
পিতা হওয়া হয়তো তাই আশঙ্কার নয় চিরতরে, 
পারদর্শী হয়েছি সে নিজেরই কল্পিত পরিসরে, 
আমার আমিত্ব যেথা একমনে খেলাধুলা করে।

একদিন শিশু হওয়া, শৈশবের থেকে হয়তো দূরে 
জীবনের শ্রেষ্ঠ কাল ফিরে দেখা আনন্দের সুরে। 
কিছু কিছু এভাবেই কালের প্রভাব এড়িয়ে আছে, 
হয়তো বা পৃথিবী সে প্রিয়পাত্র ঈশ্বরের কাছে।

Monday, July 20, 2020

আকাশ দেখা

আজ প্রভাতের আকাশে তোর আরেকটা ছবি তুলতে হত,
রূপালী রং বেলুনগুলো উড়ে যেত অদম্য প্রত্যয়ে,  
মাথার উপর আচ্ছাদনে মুগ্ধ হত বৃষ্টি। আগের মত
কত কিছুই দৈনন্দিন নতুন করে দেখতে জানতে হয়। 

হয়তো আকাশ তোর জন্যই সেজেছিল ভারাক্রান্ত দিনে, 
হয়তো সূর্য আঁচ করেছে সহযোগে কেমন করে ফুটবে, 
মেঘের পালা প্রসাধনের কাজটা একটু এগিয়ে মার্জিনে, 
কেশমালার ভাঁজগুলো আজ যেমন করে কবিতা হয়ে উঠবে।  

কালকে আবার দেখব, এখন এভাবেই তো সময় কাটার দিন, 
জীবনপথে এমন কত কথা এবং দেখার সময় আছে, 
অন্য যা সব অভিযোজ্য বস্তু সে সব হোক না অন্তরীণ, 
ভালবাসা সেসব ছাড়াও এমনি করে অনায়াসেই বাঁচে।  

Tuesday, July 14, 2020

গতিধারা

তারার খোঁজে নতুন আমি, 
এসব কথাই আশ্বাস দেয় স্বপ্ন দেখার; 
এসব কথাই অন্ধকারে 
জোনাকি হয়ে চুপিসারে 
হদিস আনে অদেখা এক অগ্নিশিখার। 
আছে এমন চতুর্দিকে, 
এরাই আমার নকশা আনে গল্প লেখার।

এরাই একটু দমকে চলে,
মাঝে মাঝে ঝিমিয়ে পড়ে সাঁঝের বেলা,  
আমরা হয়তো দুলকি চালে, 
খেয়াল খুশির দিন ফুরালে 
নজর করি আঁধার আলোর মিলনমেলা। 
এমনি করে অলক্ষ্যেতে 
রচিত হয় নতুন করে মায়ার খেলা। 

কথা রাখার সময় শুরু, 
প্রতিস্পর্ধার এভাবেই তো গ্রাসাচ্ছাদন।
এভাবেই তো ভুলিয়ে দিয়ে,  
কল্পকথার মেঘ উড়িয়ে 
স্বপ্নপুরীর দ্বিতল বাড়ির ভিত্তি স্থাপন, 
অল্পদিনে যেসব কিছু
পালটে গিয়ে হবে কেবল জীবনযাপন। 

Monday, July 6, 2020

হিসেবনিকেশ

জীবনের বহু হিসেবনিকেশ করি আমি প্রতিদিন।  
বাস্তববোধ হয়তো আমার পথে সহায়ক নয়।   
যা ছিল আমার একান্ত কিছু, এখনো তো অমলিন, 
সেই দিয়ে তার বিচার করব, সময়ের অপচয়! 

 আতস কাঁচের সাহায্যে দেখা দুনিয়াদারীর খেল, 
সব কিছু বুঝি বৃহদাকারেতে করে আজ ভয় ভীত। 
তবু আমি সেই সৃষ্টিছাড়ার দলে, নই উদ্বেল,
উদাসীন তার ভবিতব্য যে করে চলে বিস্মিত। 

প্রারব্ধ বলে পাশ কেটে যাব, সে সুযোগ ক্রমে ক্ষীণ, 
সমাজের সাথে যোগাযোগ কমে করেছে আজ একঘরে, 
পান্থজনের চিন্তাচেতনা-- সেও তো অন্তরীণ, 
জীবন কাটবে তাই বিপরীত পথেতে যাত্রা করে। 

অহেতুক সবই আমার জীবনে অযাচিত, অনাহূত,   
বিশ্লেষণের প্রচেষ্টা তাই প্রতিপদে পায় বাধা; 
কে তুমি বুঝবে এই পরিবেশে আমার মনঃপূত, 
কে তুমি ফেরাবে জীবনে আমার আত্মের মর্যাদা।