Saturday, April 25, 2015

ব্যর্থ প্রতিষেধক

দু লাইন লিখি আর দু লাইন ভাবি 
নানান চিন্তা এদিক সেদিক হাত বাড়িয়ে যায় 
কেউ দেয় আমন্ত্রণ কেউ  করে দাবী 
সব কটাকে লাথ ঝেড়ে সেই বসেছি মাচায় 

কোন ফাঁদ বিপদের কোন ফাঁদ ঝুঁকি 
তালগোলেতে কেউ বুঝি আজ বসল চড়ে শিরে 
অমলিন হৃদিকোষে কাটে আঁকিবুঁকি 
চাপ নিইনা ধুয়ে আবার শুকবো রোদ্দুরে 

মসৃণ ব্ল্যাকবোর্ড দু একটা ক্ষত 
এতই সহজ হাল ফেরাবে রঙিন চকের দাগে?  
আলকাতরার আছে প্রলেপ অক্ষত 
প্রতিষেধক নেওয়াই আছে অনেক আগে ভাগে । 

ইতিউতি চেয়ে থাকি সন্দেহ বাতিক 
অবুঝ হাওয়া হঠাৎ যেন অন্য পথে বায় 
আবহাওয়া প্রতিকূল? সান্নিপাতিক? 
কাগজওয়ালাও দু একদিন যে বারান্দা ফস্কায়। 



Wednesday, April 22, 2015

হারালাম

দু সপ্তাহ, অল্প কদিন, হিসেব কষে কর গুনি চোদ্দটা
তার মধ্যেই কেমন জানি হয়ে গিয়েছি নিতান্ত কাটখোট্টা
খুঁজছি হাঁড়ি সুকুমারের, করতে বুঝি নিজেকে  আধসিদ্ধ
যতই যা হোক রয়েছি তবু আগের মতই আজও অপাপবিদ্ধ।

অতন্দ্র এ বাস্তবতা, উপেক্ষা আর করার বুঝি দিন শেষ
চোখ যদিও খোলাই ছিল, এখন হল চিন্তাধারার উন্মেষ
তবুও কেন লুকোচুরি খেলছে আমার অনুভূতি, সূক্ষ্ম
অজান্তে আজ হলাম বুঝি, আবেগঘন থেকে হঠাৎ রুক্ষ।

কি খোয়ালাম! খোলামকুচি পেলাম কেবল অসঙ্গ লভ্যাংশ
যুক্তি দিয়ে আবেগ মাপি, তবুও তো ফল রইল অমিমাংস
খেলার মাঠে কাঙ্ক্ষিত আজ রইল কোন সুস্থিত ভারসাম্য
ফিরতে যদি অতীতে হয়, তবুও সে আজ অঙ্কে বেশী কাম্য।






Tuesday, April 14, 2015

পয়লা বৈশাখ

অনলাইনের মারফতই হঠাৎ আবিষ্কার করলাম, 'এপ্রিলের মাঝামাঝি উঠিল বাজনা বাজি পহেলা বৈশাখ এলো কাছে'। তবে আনন্দে দুই হাত তুলে নাচার পরিস্থিতি, পরিবেশ বা মানসিকতা কোনটাই যেন খুঁজে পাচ্ছি না কিছুদিন যাবৎ। বেদনার্ত হওয়ার মতও তেমন কারণ খুঁজে পাই না অবশ্য। শুধুই যা পড়ে আছে তা হল অচেতনতা, এবং সেই সাথে সাথে নিঃস্পৃহতা। কিন্তু সত্যি কি তাই পারি, বারে বারে সে জানান দিয়ে ফিরে আসে আবার আমার কাছে, তার আনন্দের ডালি হাতে। প্রবাস যাপনে সবাই আঁকড়ে ধরে আরো বেশী করে নিজের সংস্কৃতিকে, কিন্তু সম্পূর্ণ নিজের একার প্রচেষ্টায় তা করতে হলে বোধ করি আর হয়ে ওঠে না। এ হল আরেক সংস্কৃতির আধিপত্য, ল্যাদ। পয়লা বৈশাখ তার সাথে অসম লড়াইয়ে নেমেছে ঠিক, অনেক রক্ত ঝরেছে, কিন্তু নিঃশেষ হয়নি। আমাদের দেশের বিবিধ সংস্কৃতির বিভিন্ন উৎসব, কিন্তু তার মাঝে আমার আপনার চেয়ে আপন সেই ধারার কথা যেন আমাদের বেশী মনে হয়।

বাঙালীর 'বারো মাসে তেরো পার্বণ', এবং বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে মনে হয় তা একশো তিরিশ ছাড়িয়েছে। আনন্দ উপভোগ করতে কে না চায়। সারা পৃথিবী জুড়েই বিভিন্ন আনন্দানুষ্ঠানের ঘনঘটা বৎসরভর, পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের আদানপ্রদানের মাঝেই হয়তো সব মিলেমিশে একাকার হবে। আমাদের সকলের মনের অবস্থা সেই 'থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে/  কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘুর্ণিপাকে ' । সেই যুগান্তরের শেষে কি থাকবে কি থাকবে তা আন্দাজ করা বৃথা, কিন্তু উৎসবপ্রিয় বাঙালী তার এই চরিত্র যে হারাবে না এমন আশা করা কিছুমাত্র বাতুলতা বলে মনে হয় না।  

পয়লা বৈশাখের যে স্মৃতি অন্তরে খচিত আছে তা হল উদ্দীপনার। চৈত্র সংক্রান্তির ছাতুর থেকে উত্তরণ হালখাতার সন্দেশের মাধ্যমে। সেই থেকে মনে মনে নির্ধারণ করে নিয়েছিলাম গণেশের নধরকান্তি দেহের অন্তর্নিহিত কারণ। টেনিদার সময়ের সে কুট্টিমামাও নেই, সে নস্য কোম্পানিও নেই, কিন্তু সে ভীমনাগ বা সে দ্বারিক এখনো আমাদের মোহিত করে থাকে আজও পয়লা বৈশাখের দিনে। সেই সাথে বাঞ্ছারাম বা বলরাম মল্লিক, কেউই কম জান না। এই সাবেকিয়ানার সাথে আধুনিকতার মেলবন্ধনই তো এখনো ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশা জাগায়। পান্তা ইলিশের গল্প এপারে এসে এখনো তেমন বাজার গরম করতে পেরেছে বলে শুনিনি, তবে অদূর ভবিষ্যতে তাও হবে বলেই বিশ্বাস। 

বাঙালী অবশ্য বিশ্বনাগরিক, এবং বিশ্বায়নের যুগে নববর্ষ হিসাবে পয়লা জানুয়ারি ক্রমশ জায়গা দখল করছে। নববর্ষ উদযাপনের চেয়ে নিউ ইয়ারে রেজোলিউশন নিতেই আজকাল আমরা আগ্রহী বেশি। পহেলা বৈশাখ ছাড়া অন্য খুব কম দিনই আমরা বঙ্গাব্দ অনুদারে জানি, আনন্দঘন আবেশের মাঝে হয়তো একটু বিষাদের ছোঁয়া। যুগ যুগ ধরে মানুষের একই আঙ্গিকে উৎসব উদযাপন করবে এমন আশা রাখাও যুক্তিযুক্ত নয়। সেই কারণে কিছু পরিবর্তন আসবেই জীবনযাত্রায়। সেই সাথে হয়তো কিছু হারাবে, কিছু মিলবে, কিন্তু নিজের অস্তিত্বকে বিপন্ন করবে না। তাই বিশ্বাস রাখি বিবিধের মাঝে মিলনেরই। সেই মিলনের মাঝেই আমরা আমাদের পরিচয়, নিজস্বতা নিয়ে স্বতন্ত্র অথচ কূপমণ্ডূক না হয়েই বাঁঁচব। 

Tuesday, April 7, 2015

বর্ষার খোঁজ

এমনটাই চেয়েছিলাম অনেকদিন ধরে,
বৃষ্টি হবে টাপুরটুপুর আটপৌরে ছাঁটে,
দুপুরবেলা হারিয়ে যাক শিশিরস্নাত ভোরে,
স্মৃতির ছবি আটকে থাকা বিষণ্ণ মলাটে।

নেড়েচেড়ে দেখব ফের, নতুন সময়ের
নতুন কোন বর্ষা এলে, নতুন কোন মেঘ,
নতুন, সেটা বুঝতেই স্মৃতির এলবামের
খোঁজ লাগাব, জাগাতে সে ঘুমন্ত আবেগ।

অঝোরধারার অপেক্ষায় প্রতীক্ষার দিন
ধৈর্য নিয়ে টানাটানি, সময়, ঝরে যায়
শুষ্ক আর নগ্ন সাজ, যদিও সমীচিন,
উপেক্ষাই কৌশল স্থৈর্য পরীক্ষায়।


Wednesday, April 1, 2015

প্রেমাভিনয়

এখন সময় ঝলসে যাওয়ার
ভাবার সময় না
জোর করে সে আর যাই হোক
প্রেমখানা হয় না।

খোঁয়াড় ভরা পঙ্গপালে
সবাই খোঁজে প্রেম
তুইও দেখি যোগ দিয়েছিস
ভেবে নতুন গেম।

মন ভোলানোর কায়দা কানুন
ভালোই শিখেছিস
সময় পেলেই প্রেম-ছোপানো
পত্র লিখে দিস।

ভোলার ভবী অনেক পাবি
ভুলবি নিজেও ঠিক
ভুলবি এসব মোহের খেলা
শুধুই দানবিক।

এরপরে শেষ, ব্যর্থ হলে
মানবতার দোষ?
খেলার ফলে পিছিয়ে গেলেই
তীব্র অসন্তোষ।

আসলে তোর শরীর দাবী
মোটেও হৃদয় না
জোর করে সে আর যাই হোক
প্রেমখানা হয় না।